রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় পাঠানপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতির নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলছেন এলাকাবাসী। প্রধান শিক্ষকের বাড়ী সাবেক এমপি ডিউক চৌধুরীর এপিএস এর বাড়ির কাছে হওয়ায় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের মতো স্কুল চালাতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এবং ওই স্কুলের সাবেক সভাপতি আওয়ামী ক্যাডার ও ইউপি সদস্য হওয়ায় নানা ভয় ভীতি দেখিয়ে এলাকাবাসীকে চাপে রাখারও অভিযোগ করেন তারা।তবে সরকার পতনের পর সভাপতির বিরুদ্ধে থেকে সরব এলাকাবাসী। প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের পদত্যাগ চেয়ে ব্যানার টাঙ্গিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টি স্থাপনের সময় ছয় একর জমি দান করেন বিদ্যালয়ের জমি দাতারা। ফলে একটি অবৈতনিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় যা বর্তমান প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন এসে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ করছেন। নিজের মতো পকেট কমিটি করে স্কুল চালান বলে ও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
করোনাকালীন সময়ে ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অটো পাশ হওয়ায় শিক্ষা বোর্ড কতৃক ফরম পূরণের টাকা ফেরৎ দিতে বলা হয়। এসব টাকা প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করেছেন বলে ও অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, সাম্প্রতিক ওই বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর একজন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।ওই নিয়োগটি এলাকার এতিম ছেলে ফেরদৌস হাসানকে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে ফেরত দেওয়া হয়।চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর বাবার জমির উপর সাবেক সভাপতি ও ইউপি সদস্যের অবৈধ ভাটা থাকায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, বদরগঞ্জ উপজেলায় পাঠান পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই এলাকার সাবেক সভাপতি মেনহাজুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন ও বুলবুল খান। শুধু নিয়োগই নয় ওই স্কুলের জমিতে থাকা দোকান ভাড়া, পুকুর থেকে আয় কোন কিছুর হিসাব না দিয়ে নিজেরা ভাগাভাগি করে নেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এরই মধ্যে ওই স্কুলের সাবেক সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো মেনহাজুল ইসলাম ও প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বদরগঞ্জ আমলি আদালতে মামলার আবেদন করেন বৈষম্যবিরোধী নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
ফেরদৌস হাসান বলেন,আমাকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে এক বছর আগে আমার কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন সাবেক সভাপতি মিনহাজুল। সভাপতির ইট ভাটায় ওই ছেলের বাপের জমি থাকায় এবং আমার চেয়ে টাকা বেশি দেওয়ায় তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ওই এলাকার মাজেদ আলী খান(মংলু) বলেন, এই স্কুলে লুটপাট চলছে। খালিয় খাওয়া দাওয়া। কেউ ইটভাটা বাচাওছে কেউ জমি নেওছে।মোকও ১০ হাজার টাকা দিবার চাইছিলো যাতে ওমার বিরুদ্ধে কথা না কও।একরাইশ দেকানভাড়া, পুকুর, সব হেডমাস্টার আর সভাপতি মারি খাইছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো নাজির হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করাতে বলা হয়েছে। তদন্ত ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।