লক্ষ্য খুব বড় ছিল না, ১৪৮ রানের। কিন্তু আরও একবার সমর্থকদের শ্বাসবন্ধ করা পারফরম্যান্স বাংলাদেশের। হারের শঙ্কায় পড়ে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া। শারজায় রুদ্ধশ্বাস দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে শেষ ওভারে এসে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখে জিতে নিয়েছে জাকের আলীর দল।
রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মিডঅফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম (৭ বলে ২)। ওমরজাই নিজের পরের ওভারে এসে পারভেজ হোসেন ইমনকে (৫ বলে ২) করেন এলবিডব্লিউ। সাইফ হাসান বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন। কিন্তু অতি আত্মবিশ্বাসী হতে গিয়ে ভুল করে বসেন।
মুজিব উর রহমানের ঘূর্ণিতে হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন আকাশে। ১৪ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ১৮ করে আউট হন সাইফ। ২৪ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রশিদ খানের এক ওভারে শামীম পাটোয়ারী একটি করে চার-ছক্কা হাঁকালে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেটে মোটে ৩৭ রান তুলতে পারে টাইগাররা।
চতুর্থ উইকেটে জাকের আলী আর শামীম মিলে ৩৭ বলে ৫৬ রানের জুটিতে বিপদ অনেকটা কাটিয়ে উঠেন। জাকেরকে এলবিডব্লিউ করে এই জুটি ভাঙেন রশিদ খান। জাকের ২৫ বলে ৩২ রানের ইনিংসে হাঁকান দুটি করে চার-ছক্কা।
শামীম দারুণ খেলছিলেন। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন তিনি। ২২ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় শামীমের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। এরপর নাসুম আহমেদ ১১ বলে ১০, সাইফউদ্দিন ২ বলে ৪ আর রিশাদ হোসেন ২ বলে ২ করে আউট হয়ে গেলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ১২৭ রানে হারায় ৭ উইকেট।
তবে নুরুল হাসান সোহান একপ্রান্ত ধরে রেখে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। দারুণ সঙ্গ দেন শরিফুল ইসলাম। সোহান ২১ বলে ১ চার আর ৩ ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন। ৬ বলে অপরাজিত ১১ করেন শরিফুল। তিনিই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করেন। আফগানিস্তানের ওমরজাই ২৩ রানে শিকার করেন ৪টি উইকেট।
এর আগে বাংলাদেশের দারুণ ডেথ বোলিংয়ে উইকেট হাতে রেখেও পুঁজি বড় করতে পারেনি আফগানিস্তান। ৫ উইকেটে ১৪৭ রানেই আটকে যায় স্বাগতিকরা।
শারজায় টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জাকের আলী।শুরু থেকেই আফগানদের চাপে রাখেন শরিফুল-নাসুমরা।
উইকেট না হারালেও প্রথম পাঁচ ওভার হাত খুলে খেলতে পারেননি দুই ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান আর সেদিকুল্লাহ অতল। ৫ ওভারে তারা তোলেন মাত্র ২২ রান। ষষ্ঠ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের ওপর চড়াও হন জাদরান। ওই ওভারে আসে ১৩ রান। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে আফগানরা তোলে বিনা উইকেটে ৩৫।
১০ ওভারে ১ উইকেটে ৬৯ রান তোলে আফগানরা। এরপর রানের গতি বাড়াতে গেলে দ্রুত দুটি উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। ৩৭ বলে ৩৮ করে নাসুমের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি দড়ির কাছে রিশাদের ক্যাচ হন জাদরান।
পরের ওভারে রিশাদ তুলে নেন ওয়াফিউল্লাহ তারাখিলকে। অভিষিক্ত এই ব্যাটার মাত্র ১ রান করে হন লংঅনে সাইফউদ্দিনের ক্যাচ। ৯ বলে ১৪ রানে নাসুমের দ্বিতীয় শিকার হন দারউইশ রসুলি। দুর্দান্ত রানিং ক্যাচ নেন পারভেজ হোসেন ইমন।
এরপর হাত খোলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। দারুণ বোলিং করা শরিফুল ১৭তম ওভারে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে তাকে বোল্ড করেন। ২২ বলে ৩০ করেন গুরবাজ।
ডেথে দারুণ বোলিং করেন শরিফুল, মোস্তাফিজ আর সাইফউদ্দিন। ৫ উইকেট হাতে রেখেও শেষ ৪ ওভারে ৩০ রানের বেশি নিতে পারেনি আফগানরা।
নাসুম ৪ ওভারে ২৫ আর রিশাদ ৪৫ রান দিয়ে নেন দুটি করে উইকেট। ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে একটি উইকেট পান শরিফুল। সাইফউদ্দিন উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে দেন মাত্র ২২ রান। মোস্তাফিজ ছিলেন খরুচে। ৪০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন কাটার মাস্টার।