তিন ম্যাচেই জয়। তিন ম্যাচেই রান তাড়া করে সাফল্য। সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই আলাদা করে আলো ছড়িয়েছে কেউ না কেউ। তবে শেষ ম্যাচে ছিলেন কেবল এক নায়ক-সাইফ হাসান। ব্যাট হাতে তার ধ্বংসাত্মক ইনিংসে উড়ে গেছে আফগানদের সব পরিকল্পনা।
মাত্র ৩৮ বলে ৭ ছক্কা ও ২ চারে গড়া ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস, তার ওপর আবার সুনির্দিষ্ট ছন্দে রান তাড়া—সব মিলিয়ে ম্যাচটা হয়ে ওঠে একতরফা। সাইফের সঙ্গে ছিলেন নুরুল হাসান সোহান, যার ছক্কাতেই শেষ হয় ম্যাচ।
এর আগে আজ টসে হেরে ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান। বাংলাদেশি পেস-স্পিন মিলিয়ে করা আক্রমণের বিপরীতে তাদের শুরুটা ছিল অত্যন্ত বাজে। পাওয়ারপ্লের মধ্যেই হারায় ৩ উইকেট। গুরবাজ, ইবরাহিম জাদরান, তারাখিলরা একের পর এক ফিরে যান।
যদিও মাঝখানে সেদিকউল্লাহ আতাল, রাসুলি ও মুজিব কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন, তবে বাংলাদেশি বোলারদের ধারার সামনে বেশিদূর এগোতে পারেননি কেউই। তানজিম হাসান সাকিব ১৫তম ওভারে টানা দুই বলে রশিদ খান ও আহমেদজাইকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান।
আফগানিস্তানের ইনিংস থামে ১৪৩ রানে। বাংলাদেশের হয়ে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার করেন নাসুম ও তানজিম সাকিব।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ শুরু করে বুঝেশুনে। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন দ্রুত বিদায় নিলেও তানজিদ হাসান ও সাইফ হাসান গড়েন কার্যকর জুটি। তানজিদের ৩৩ রান ও সাইফের ঝড়ো ইনিংসে ম্যাচ প্রায় একপেশে হয়ে যায়।
অধিনায়ক জাকের আলী অনিক কিছু করতে পারেননি, ১১ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন। শামীম হোসেন ফিরেন প্রথম বলেই। তবে সাইফের একার ব্যাটিং ও সোহানের ঠাণ্ডা মাথার সমর্থনে জয় আসে অনায়াসেই।
এই জয় বাংলাদেশের জন্য প্রতিশোধেরও প্রতীক। ২০১৮ সালে আফগানিস্তান যে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল, এবার তার পাল্টা জবাব দিল টাইগাররা। শুধু জবাবই নয়, তা করা হলো আফগানদের সবচেয়ে প্রিয় ভেন্যু শারজাহতে, যেখানে তারা ছিল অপরাজেয়।
এবার সেই দুর্গ ভেঙে ফেলল বাংলাদেশ! টানা তিন টি-টোয়েন্টিতেই ধরা দিল জয়!
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৪৩/৯ (রাসুলি ৩২, আতাল ২৮, মুজিব ২৩*; সাইফউদ্দিন ৩/১৫, নাসুম ২/২৪, তানজিম ২/২৪, শরীফুল ১/৩৩, রিশাদ ১/৩৯)।
বাংলাদেশ: ১৮ ওভারে ১৪৪/৪ (সাইফ ৬৪*, তানজিদ ৩৩, পারভেজ ১৪, নুরুল ১০*, জাকের ১০; মুজিব ২/২৬, ওমরজাই ১/১২, আহমেদজাই ১/৫০)।
ফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: সাইফ হাসান।
সিরিজসেরা: নাসুম আহমেদ।
সিরিজ: বাংলাদেশ ৩–০ ব্যবধানে জয়ী।