


নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের তীব্র যানজট নিরসনে কয়েকটি পয়েন্টে সড়কে বসানো হয়েছে সড়ক ডিভাইডার (বিভাজক)। আর এতে করে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহনগুলো অনেকটাই সারিবদ্ধ ও সুশৃঙ্খলভাবে নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। ফলে এ সব অস্থায়ী ডিভাইডারগুলো ঘিঞ্জি এ শহরের অসহনীয় যানজট দূরীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। উত্তর জনপদের শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর নীলফামারীর সৈয়দপুর। সৈয়দপুর পৌরসভার আয়তন ৩৪.৪২ বর্গকিলোমিটার। এ শহরের তিনভাগের দুই ভাগ জায়গা জমিই হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ের। ফলে এ শহরটি পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেনি। রেলওয়ের অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত জায়গা জমিতে রাতারাতি যে যেভাবে পেরেছেন সুযোগ মতো গড়ে তুলেছেন বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কলকারখানা।
বাণিজ্য প্রধান এ শহরে ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে আশেপাশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলার মানুষ প্রতিনিয়ত আসেন। এতে করে সৈয়দপুর উপজেলা ছাড়াও বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলার নানা রকম অসংখ্যক যানবাহন ভিড় করে এখানে। কিন্তু এ শহরের যানবাহনের তুলনায় সড়কের সংখ্যা একেবারে কম। আর যে কয়েকটি সড়ক রয়েছে সে সবও অপ্রশস্ত। তার ওপর আবার সড়কের ফুটপাত দখল করে বসে অসংখ্যক দোকানপাট। এ সব নানাবিধ কারণে ঘিঞ্জি এ শহরের নিত্যদিন তীব্র যানজট লেগেই থাকে। আর অসহনীয় যানজটে পড়ে স্কুল-কলেজ ও অফিস-আদালতগামী মানুষ ও শিক্ষার্থীরা পড়েন চরম বিপাকে। এতে করে মানুষের কর্মঘণ্টা অপচয় হওয়াসহ দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন শহরবাসী। ট্র্যাফিক পুলিশ বিভাগের সদস্যরা দিনরাত কাজ করেও শহরের তীব্র যানজটের কোন সমস্যা করতে পারছিলেন না। শহরের তীব্র যানজট সমস্যা সমাধানে সৈয়দপুর পৌরসভা ও ট্র্যাফিক বিভাগ একাধিকবার উদ্যোগ নিলেও কোন ফলপ্রসূ সমাধান হচ্ছিল না।
এ অবস্থায় সৈয়দপুর শহরের যানজট নিরসনে পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ বিকল্প উপায় খুঁজছিলেন। অবশেষে নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার এএফএম তারিক হোসেন খানের উদ্যোগে ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে সৈয়দপুর শহরের কয়েকটি পয়েন্টে অস্থায়ী ডিভাইডার স্থাপন করা হয়েছে। নীলফামারী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) একেএম ওহিদুন্নবীর সার্বিক তদারকিতে এবং ট্র্যাফিক পুলিশের পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) মো. মাহফুজার আলম নীলফামারী পুলিশ সুপারের উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করেন। আর এটি বাস্তবায়নের ফলে বর্তমানে শহরে আগের তুলনায় যানজট সমস্যার অনেকটাই হ্রাস হয়েছে। এখন সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো রিকশা, রিকশাভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো সৃশৃঙ্খল ও সারিবদ্ধভাবে চলাচল করছে।
ফলে আগের মতো আর যানজট পরিলক্ষিত হচ্ছে না শহরের। এতে করে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন শহরবাসীও। সৈয়দপুর ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) মো. মাহফুজার আলম বলেন, শহরের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে দুই জন (ট্র্যাফিক পুলিশ পরিদর্শক) টিআই ও তিনজন সার্জেন্ট এর নেতৃত্বে ১৮জন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। কিন্তু তারপরও এ শহরের যানচলাচল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছিল ট্র্যাফিক বিভাগকে। এ অবস্থায় নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) স্যারের উদ্যোগে ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে শহরের যানজট নিরসনে আটটি পয়েন্টে আশিটি কংক্রিটের খুঁটিতে বাঁশ বেঁধে অস্থায়ী ডিভাইডার বসানো হয়। এতে করে কিছুটা হলেও যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ এসেছে। সকল রকম যানবাহন এখন আগের মতো বিশৃঙ্খলভাবে চলাচলের সুযোগ পাচ্ছে না। তারা এখন সুশৃঙ্খল ও সারিবদ্ধভাবে চলাচল করছে। এতে শহরের যানজট অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। তিনি সৈয়দপুর শহরের যানজট সমস্যা নিরসনে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন শহরবাসী।