


দেশে কীটনাশক উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করেছে সরকার। এতে ওষুধ শিল্পের মতো স্থানীয়ভাবে উৎপাদন সম্ভব হবে সব ধরনের বালাইনাশক। এর ফলে দেশের কৃষি খাতে আমদানি নির্ভরতা কমবে, উৎপাদন বাড়বে একই সঙ্গে রপ্তানিতে যোগ করবে নতুন সম্ভাবনা।
সংশ্লিষ্টতা জানান, বর্তমানে দেশের কীটনাশক বাজারের আকার প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশ বাজার দখলে রয়েছে বহুজাতিক কোম্পানির, ৪১ শতাংশ আমদানিকারকদের হাতে এবং দেশীয় উৎপাদনকারীদের অংশ মাত্র ৪ শতাংশ। কারণ কীটনাশক উৎপাদনের কাঁচামালে শুল্কহার ৩০ থেকে ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত, যেখানে প্রস্তুত পণ্য আমদানিতে শুল্ক মাত্র ৫ শতাংশ। ফলে উৎপাদনের তুলনায় আমদানিই ছিল বেশি লাভজনক।
বিএএমএর সভাপতি কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এসে সরকার উৎপাদনকারীদের দাবি বাস্তবায়ন করেছে– এর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এখন দায়িত্ব এনবিআরের। তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিলে আগামী ২–৩ বছরের মধ্যে আর কোনো বালাইনাশক আমদানি করতে হবে না। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বিদেশেও রপ্তানি করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, সরকারের এই সহযোগিতা মানে কৃষকের সঙ্গে কাজ করা, কৃষকের পক্ষে দাঁড়ানো। শুল্ক রেয়াত পেলে দেশীয় উৎপাদনকারীরা পণ্যের দাম অন্তত ৩০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারবেন। এতে ভেজাল ও নিম্নমানের আমদানি হওয়া কীটনাশক থেকে কৃষকরা মুক্তি পাবেন।
বর্তমানে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার (এনএসি), অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (এসিআই), স্কয়ারসহ প্রায় ২০টি স্থানীয় কোম্পানি কীটনাশক উৎপাদনে যুক্ত আছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বাজেট বক্তৃতায় কৃষি খাতে ব্যবহৃত কীটনাশকের কাঁচামাল আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক ও কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। কিন্তু উচ্চ শুল্কের কারণে এতদিন দেশে কীটনাশক উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালে সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হতো, যেখানে আমদানিতে দিতে হতো মাত্র ৫ শতাংশ।
স্থানীয় উদ্যোক্তারা বলেন, এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি শিল্পকে নয়, পুরো কৃষি খাতকে বদলে দেবে। তাদের প্রত্যাশা, সরকারের এই নীতিগত সহায়তা দেশীয় উৎপাদনে গতি আনবে, কৃষকের ব্যয় কমাবে এবং আগামী দিনে কীটনাশক রপ্তানিতে ‘বাংলাদেশ’ নামটি গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হবে।