
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার গণেশপাড়া গ্রামে এক গৃহবধূর মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও, পারিবারিক নির্যাতন, পরকীয়া ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগ উঠে এসেছে। নিহত নারী বিনতী রানী (২৮) স্বামীর অনুপস্থিতিতে দেবরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর গর্ভবতী হন, যা জানাজানি হতেই পরিবারের চাপ ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তাকে জোর করে গর্ভপাত করানো হয়, যা নিয়ে পারিবারিক কলহ চরমে পৌঁছায়। ঘটনার পরদিনই নিজের ঘরে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে পারিবারিক কলহ ও নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত নারী বিনতী রানী (২৮) ওই গ্রামের সবুজ পালের স্ত্রী। তার স্বামী ঢাকায় কর্মরত থাকায় তিনি শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার দেবর সুমন পাল (২৩)-এর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এ থেকেই পারিবারিক কলহের সূত্রপাত হয়,
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, বিনতী রানী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে তাকে গর্ভপাত করানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন। গত ১৯ মার্চ তাকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর ওষুধ খাওয়ানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ নিয়ে ২০ মার্চ রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার তুমুল বাগবিতণ্ডা হয়। একজন প্রতিবেশী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বিনতী রানীর দেবর ও শাশুড়ি তাকে মানসিকভাবে প্রচণ্ড চাপ দিতেন। তার গর্ভবতী হওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকে তাকে প্রায়ই কটূক্তি করা হতো।”
পরিবারের সঙ্গে তুমুল ঝগড়ার পর ২১ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজের ঘরের ধরনার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন বিনতী রানী। পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে, কিন্তু ততক্ষণে তিনি নিথর হয়ে পড়েছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিনতী রানীর বাবার বাড়ির লোকজন এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা মানতে নারাজ। তারা অভিযোগ করেছেন, বিনতীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শওকত আলী সরকার বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার ঘটনা হিসেবে তদন্ত করছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।”এরই মধ্যে দেবর এবং শাশুড়িকে আটক করেছি আমরা।
Related