1. [email protected] : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
  2. [email protected] : Sokaler Bani : Iqbal Sumon
  3. [email protected] : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
মেলা বন্ধে ডিসি-এসপিকে উকিল নোটিশ, বদরগঞ্জে মেলার নামে মাসব্যাপী র‌্যাফেল ড্র নিঃস্ব মানুষ | দৈনিক সকালের বাণী
শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

মেলা বন্ধে ডিসি-এসপিকে উকিল নোটিশ, বদরগঞ্জে মেলার নামে মাসব্যাপী র‌্যাফেল ড্র নিঃস্ব মানুষ

নিউজ ডেস্ক
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৪৫ জন দেখেছেন

রংপুরের বদরগঞ্জে ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প মেলার নামে মাসব্যাপী চলছে রমরমা র‌্যাফেল ড্র। রংপুর ও দিনাজপুরের কয়েকটি উপজেলায় তিন’শ রিক্সা, অটোরিক্সায় বিভিন্ন পথে-ঘাটে, সড়কে, হাটে-বাজারে, গ্রাম-গঞ্জের অলি-গলিতে এই র‌্যাফেল ড্র’র টিকেট বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। এতে করে প্রতিদিন কমপক্ষে এক কোটি বিশ লাখ টাকা লুটে নিচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। বেড়েছে চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ।
সম্প্রতি, এই র‌্যাফেল ড্র বন্ধে রংপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন বদরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা লাভলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি।

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, মেলাটি আমরা অনুমোদন দেইনি। দিয়েছে সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যে আমরা ভ্রাম্যমান আদালতে ৯ জনকে সাজা দিয়েছি। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আমরা এনিয়ে কঠোর। এই র‌্যাফেল ড্র বন্ধে যার যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করা উচিৎ। এদিকে, এই মেলার নামে র‌্যাফেল ড্র বন্ধে সম্প্রতি স্থানীয়রা বদরগঞ্জে দিনব্যাপী সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিলেও কোন উদ্যোগই বাস্তবায়ন হয়নি। তাই র‌্যাফেল ড্র বন্ধে সেনাপ্রধানের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

জানা গেছে, রংপুরের বদরগঞ্জ ও দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মধ্যবর্তী এলাকা হাসিনা নগরে গত ১৮ আগষ্ট এই মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলায় প্রবেশ মূল্যের নামে ২০ টাকা দরে টিকেট বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন রংপুর-দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় টিকেট নিয়ে সকালেই বের হয় অটোরিকশা, রিক্সা। প্রতিটিতে রিক্সা-অটোরিক্সায় ২০টি বান্ডিলে পাঁচ কালারের দুই হাজার টিকেট থাকে। প্রতি টিকেটের দাম বিশ টাকা হারে দুই হাজার টিকেট বিক্রি হচ্ছে ৪০ হাজার টাকা। সে হিসাবে তিন’শ রিক্সা অটোরিক্সায় ১ কোটি ১২ লাখ টাকা বিক্রি হয়। এছাড়াও মেলা মাঠের ভেতর ও মেলা গেট এবং হাসিনা নগরে অন্তত এক’শ কর্মী এই টিকেট বিক্রি করছেন।

এদিকে, মধ্যরাতে মেলা কর্তৃপক্ষ কমপক্ষে দামী পাঁচটি মোটরসাইকেল, আট/দশ ভরি স্বর্নালঙ্কারসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরণের আকর্ষণীয় পুরুস্কার দিয়ে প্রতিদিন ড্র করছেন। যা স্থানীয় ডিস লাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বদরগঞ্জ উপজেলার হাসিনা নগরে চলা এই মেলার পূর্ব পাশে রয়েছে অন্তত ১৫টি খাবার দোকান ও ম্যাজিক শো, উত্তরে সার্কাসের নামে উদ্যাম নৃত্য ও মোটরসাইকেল খেলার নামে মৃত্যুকুপ, পশ্চিমে র‌্যাফেল ড্র’র স্টেজ, মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে নিম্মমানের কিছু সংখ্যাক দোকান পাঠ। মাঝ মাঠে রয়েছে শিশুদের জন্য কয়েকটি বিনোদনের ব্যবস্থা আর র‌্যাফেল ড্র’র টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা।

মেলায় যাওয়া দর্শনার্থীরা জানান, মেলায় যেসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে তা অত্যান্ত নিম্মমানের। কিন্তু দাম নেয়া হচ্ছে অনেক বেশী। এখানে কাষ্টমস ও ভোক্তা অধিকারের অভিযান চালানো উচিৎ।
এদিকে, প্রতিদিন সন্ধা হতে না হতেই মানুষজন ছোটেন মেলা মাঠের দিকে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মোটরসাইকেল রাখার জন্য করা হয়েছে গ্যারেজ। দীর্ঘদিন ধরে মেলার নামে এমন র‌্যাফেল ড্র’র কার্যক্রমে ক্ষুব্ধ সচেতন নাগরিক সমাজ।

বদরগঞ্জের হোটেল ব্যবসায়ী আহমেদুল জানান, মেলা শুরুর পর থেকে বদরগঞ্জের ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা করতে পারছেন না। বিভিন্ন গ্রামে ছোট ছোট চুরির ঘটনাও ঘটছে।
বদরগঞ্জ মডেল মসজিদের ইমাম মহিউদ্দিন তৌহিদ জানান, আমরা ওলামায়ে কেরামের পক্ষে আন্দোলন করেছি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অশ্বস্থ করা হয়েছে যে মেলায় এসব চলবে না। তারাও কথা রাখেনি। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও কথা রাখেনি। অনেককে হুমকি দেয়া হয়েছে। সে কারণে আর এটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
বদরগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট গোলাম রসুল বকুল বলেন, এটি নি:সন্দেহে সামাজিক অবক্ষয়। মেলার নামে র‌্যাফেল ড্র বন্ধে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যদি এরপরেও বন্ধ না হয় তবে, আরো আন্দোলন করা হবে।
মেলার পরিচালক বেলাল হোসেন বলেন, আমাদেরকে মেলার অনুমোদন দিয়েছে সেনাবাহিনী। মেলায় যা যা দেখছেন সব কিছুর অনুমোদন আছে।

নাগরিক কমিটির সদস্য ও সুজন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, কোন ধরণের ঝুঁকি না থাকলে জেলা প্রশাসন পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মাধ্যমে মেলার অনুমোদন দিয়ে থাকে স্থানীয় উদ্যোক্তা ও ব্যবসা বানিজ্যেও সম্প্রসারণের জন্য। কিন্তু শিল্প ও বানিজ্যের কথা বলে চরিত্র হননের মতো জুয়া ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হয় সেক্ষেত্র একদিকে নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক অবক্ষায় ও ঝুঁকি বেড়ে যায়। এতে চুরি বেড়ে যাবে, ছিনতাই বেড়ে যাবে, যার প্রভাব পড়বে সমাজ ও পরিবারে। আমি মনে করি সেনাবাহিনীর ম্যাজিষ্ট্রেসি পাওয়ার আছে, অভিযান চালিয়ে এসব বন্ধ করা।

রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল জানান, এই মেলার অনুমোদন আমরা দেইনি। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া আছে, যেখানেই অবৈধ কার্যক্রম হবে সেখানেই ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নিতে। আমরা সেটাই করছি।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম বলেন, এটা যেহেতু সেনাবাহিনী অনুমোদন দিয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত দৈনিক সকালের বাণী
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )