গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শেখ হাসান পলাশের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার বিকেলে ডিবিসি নিউজের ইলেকশন এক্সপ্রেস অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুরাতন ফুলছড়ি উপজেলা চত্বরের পাশে নৌঘাঁটে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ রয়েছে, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাদের হোসেন মাষ্টার এবং উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাদেকুল ইসলাম নান্নুর নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, শেখ হাসান পলাশ অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফেরার সময় নৌঘাঁটিতে ওত পেতে থাকা প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন বিএনপি নেতাকর্মী তার ওপর চড়াও হন। তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং পরে বেধড়ক মারধর ও লাঞ্ছিত করেন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাদের হোসেন মাষ্টারের অতীতেও চাঁদাবাজি ও দলীয় অশান্তি সৃষ্টির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
হামলার ঘটনার পরের দিন (শনিবার) এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাদের হোসেন মাষ্টার ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রোকনের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে শেখ হাসান পলাশকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, তিনি ফেসবুকে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তিমূলক বক্তব্য প্রচার করেছেন এবং তাকে পাঁচ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জবাব দিতে বলা হয়।
এদিকে হামলার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছেন বিএনপির অনেক নেতাকর্মী। এর প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে এরেন্ডাবাড়ির হরিচণ্ডি বাজারে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। শনিবার সন্ধ্যায় এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের হরিচন্ডী বাজারে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় হামলার শিকার শেখ হাসান পলাশের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি শাহিন আলম, সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক মাস্টার, ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আখলাসুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক এরশাদ, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফিরোজ মোল্লা, ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
হামলার শিকার শেখ হাসান পলাশ বলেন,
আমি প্রোগ্রাম শেষে বাড়ি ফিরছিলাম। এম এম উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে উপজেলা সভাপতি সাদেকুল ইসলাম নান্নু ও ইউনিয়ন সভাপতি নাদের মাষ্টার আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাদের লোকজনকে নিয়ে জনসংযোগ না করার কারণে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে তাদের নেতৃত্বে আমাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়। এখন তারা উল্টো আমাকে মিথ্যা অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে, যা বেআইনি।
অন্যদিকে, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নাদের হোসেন মাষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। এসব সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাদেকুল ইসলাম নান্নু বলেন, শেখ পলাশ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও কটূক্তি করেছেন। তাই দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ সাজানো নাটক, এর সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।