


লালমনিরহাটের সীমান্তবর্তী পাটগ্রাম উপজেলায় রাসায়নিক সার মজুদ ও অতিরিক্ত দামে বিক্রির অভিযোগে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ‘সকালের বাণী’ পত্রিকায় সার সংকট নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরই এই অভিযানে নামে প্রশাসন। অভিযানে মোট ৯ হাজার ৮০ বস্তা সার জব্দ এবং ১৪ জন সার বিক্রেতাকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গত ২৪ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলা এ অভিযানে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উত্তম কুমার দাশ।
অভিযানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দোকান ও গোডাউন থেকে ইউরিয়া, টিএসপি ও ডিএপি প্রকারের সার জব্দ করা হয়। এর মধ্যে দহগ্রামগামী সড়কের মেসার্স ব্রাদার্স ট্রেডার্স (হায়দার আলী রাসেল) ১৩০০ বস্তা,পাটগ্রাম বড়ো মসজিদ এলাকার মেসার্স জান্নাত ট্রেডার্স (মিলন শেখ)৭০০ বস্তা, আন্তঃজেলা মোড়ের মেসার্স মনিরুজ্জামান মনু ট্রেডার্স ৯২০ বস্তা। ধবলসুতি এলাকার মঞ্জুরুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান ১০৬৩ বস্তা, মুন্সিরহাটের মেসার্স পাটোয়ারী ট্রেডার্স (ফরিদুল ইসলাম) ৪৩৫ বস্তা, ললিতারহাটের মেসার্স সুমন ট্রেডার্স (আব্দুল হামিদ) ১১৩০ বস্তা, ললিতারহাটের মেসার্স কাজল ট্রেডার্স (হাফিজুল ইসলাম) ২৫০ বস্তা, মেসার্স রাফাত ট্রেডার্স (রাইসুল ইসলাম) ৩৮৮ বস্তা, পাটগ্রাম বাজারের মেসার্স ভাই ভাই ট্রেডার্স (রুবেল ইসলাম) ১১২ বস্তা, সোহাগপুরের মেসার্স অন্তর ট্রেডার্স (আব্দুল আজিজ) ১৬১৩ বস্তা, কদুর বাজারের মেসার্স প্রধান ট্রেডার্স (আল কাওছার বিলাস প্রধান) ২১৪ বস্তা, মেসার্স মামা- ভাগিনা ট্রেডার্স (আল আমিন) ১৯২ বস্তা, ভেরভেরিরহাটের মেসার্স রিফাত অ্যান্ড রিশাদ ট্রেডার্স (বুলবুল হোসেন) ৩৪৭ বস্তা, মেসার্স অগ্রণী ট্রেডার্স (ফারুক আহম্মেদ) ৪১৬ বস্তাসহ মোট ৯০৮০ বস্তা সার জব্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুদ ও অতিরিক্ত দামে বিক্রির অভিযোগে ফারুক আহম্মেদকে ৩০ হাজার, মিলন শেখ, হায়দার আলী রাসেল, মনিরুজ্জামান মনু ও আব্দুল হামিদকে ২০ হাজার করে, এবং রাইসুল ইসলাম ও হাফিজুল ইসলামকে ১০ হাজার করে টাকা জরিমানা করে।
অভিযান শেষে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উত্তম কুমার দাশ বলেন, “সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুদ করে বেশি দামে বিক্রি করার অপরাধে মোট ১৪ জন সার বিক্রেতাকে জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ করা ৯০৮০ বস্তা সার কৃষকদের মধ্যে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা হবে।” উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, “অবৈধভাবে সার মজুদ ও বেশি দামে বিক্রির কারণে বাজারে সারের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছিল। এ ধরনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে। কৃষকের হাতে সরকারি বরাদ্দের সার যেন ন্যায্য দামে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।”