টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনের বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন নদী পাড়ের মানুষজন। গত দুইদিনে ধরলা নদীর পানির বৃদ্ধি পাওয়ায় উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের আক্কেল মামুদ কমিউনিটি ক্লিনিক, কুদেরকুটি কাশেম বাজার জামে মসজিদ এবং ৬০টি বসতবাড়িসহ শতাধিক ফসলি জমি, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া খুদেরকুটি আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। অব্যাহত ভাঙন ঠেকাতে দিন-রাত গাছের ডাল ও বস্তা ফেলে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন ভাঙন কবলিত মানুষজন।
এদিকে, তিস্তা নদী বেষ্টিত রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের গতিয়াশাম, খিতাবখাঁ, মাঝের চর এলাকার ১৫টি বসতভিটা ও উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের দঁড়িকিশোরপুর, নগরপাড়া, হোকডাঙ্গা, জুয়ান সতরা, গোড়াইপিয়ার। দলদলিয়া ইউনিয়নের অর্জুন এলাকার প্রায় ২০টি বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙা ইউপি সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, গত দুই দিনে ১৫ বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। তিস্তা নদীর পানি কমলেও এখনও এ এলাকায় প্রায় ২০০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ভাঙন কবলিত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের আকতার হোসেন, মোক্তার হোসেন, মহুবর রহমান, ইব্রাহীম আলী জানান, আমাদের বসতবাড়ি ও জমাজমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন রোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এলাকার মানুষ সর্বশান্ত হয়ে যাবে।
বেগমগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া বলেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ধরলার ভাঙনে আমার বাড়িসহ ৬০টি বসতবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিক বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে স্কুল, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রসহ সব কিছু নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আক্কেল মামুদ কমিউনিটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তবে উপকরণসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে লোক পাঠানো হয়েছে। ভাঙন রোধে এক হাজার ৫০০ জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হয়েছে।