গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। ২১ জুলাই মঞ্জু মিয়ার মরদেহ গ্রামের বাড়ি ছাওলা ইউনিয়নের জুয়ান গ্রামে দাফন করা হয়। এরপর হতে নানা দুচিন্তা অনাহারে দিন কাটে তার পরিবারের। বর্তমানে তাঁরা ঠাঁই নিয়েছেন তিস্তা নদীর বেড়িবাঁধে।
সাড়ে চার বছরের মেয়ে মোহনা আক্তার মিম ও দেড় বছর বয়সী ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিককে নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন রহিমা বেগম। উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে গ্রামে শ্বশুরবাড়িতেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে নানা অপবাদ ও অবহেলার কারণে সেখানে জায়গা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে দুই সন্তানসহ ঠাঁই নিয়েছেন ভূমিহীন বৃদ্ধ বাবা আব্দুর রহমানের ঘরে, যিনি নিজেই চলতে পারেন না।
থাকেন পীরগাছার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের সাহেব বাজারের পাশে, তিস্তা নদীর বেড়িবাঁধে। রহিমা বেগমের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে বাঁকা চোখে দেখছেন। কোনো খোঁজখবর নেন না। এমনকি রহিমার কারণে নাকি তাঁদের ছেলে মারা গেছেন—এমন অপবাদও তাঁকে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘স্বামীকে হারিয়ে এখন থাকছি বাবার বাড়িতে।সন্তানদের নিয়ে আমি এখন কোথায় যাব? এদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তিত।
রহিমা জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়নের কারণে তিনি ভবিষ্যতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। সন্তানদের ভবিষ্যৎ জীবনের সুরক্ষা চান তিনি। সম্ভব হলে থাকার জন্য সরকারি ঘর বরাদ্দ চান। তবে উপজেলা প্রশাসন ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান রহিমা। ওই টাকা দিয়ে তিনি দেনা পরিশোধ করেছেন।
রহিমার বাবা আব্দুর রহমান জানান, তিনি নিজেই কাজকর্ম করে রোজগার করতে পারেন না। এখন স্বামীহারা মেয়ে ও দুই নাতি-নাতনির ভরণ-পোষণ কিভাবে করবেন? অভিযোগের বিষয়ে রহিমা বেগমের শ্বশুর এনছের আলী বলেন, ‘রহিমা বেগম আমাদের কথামতো চলছে না। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না—এটা সত্য।