‘সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা একটা পত্রিকাকে কতদূর নিয়ে যেতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ সকালের বাণী। পত্রিকাটি গত এক বছরে যা দেখিয়েছে অনেক নামি দামী জাতীয় পত্রিকাও তা দেখাতে পারেনি। সকালের বাণী যেন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে, কোন হলুদ সাংবাদিকতা যেন এখানে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রংপুরে অনেক নামি-দামি পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেও শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখতে পারেনি। দেশ বিভাগের আগ থেকে নুরলদিন, শংকু সমজদারসহ চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদেরা পট পরিবর্তনের যে ইতিহাস রচনা করেছে রংপুরে তা চিরদিন থেকে যাবে। সেই রংপুরে সকল আন্দোলন সংগ্রামে সকালের বাণী মুখপত্র হিসেবে কাজ করুক, পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী সংবাদ পরিবেশন করুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।’ শুক্রবার (০১ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর পুলিশ কমিউনিটি সেন্টারে দৈনিক সকালের বাণীর প্রথম প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজার রহমান এসব কথা বলেন।
দৈনিক সকালের বাণীর প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন ও দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। রংপুর পুলিশ কমিউনিটি সেন্টার থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় দৈনিক সকালের বাণীর সম্পাদক ও প্রকাশক মো. হযরত আলীর সভাপতিত্বে ও পরিকল্পনা সম্পাদক ফরহাদুজ্জামান ফারুকের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বার্তা সম্পাদক এস এম ইকবাল সুমন।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মো. মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব ও রংপুর পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাজী মো. জুননুন, রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোনাব্বর হোসেন মনা, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর রংপুর মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু, রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী, রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বপন চৌধুরী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান তাবিউর রহমান, দৈনিক আগামীর সন্ধানে পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আব্দুর রউফ সরকার, এনটিভির সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার একেএম মঈনুল হক, মাহিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি বাবলু নাগ, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের শিক্ষক ও সংগঠক আজহারুল ইসলাম, বাংলার চোখের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তানবীর হোসেন আশরাফি, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন রংপুরের সভাপতি মমিনুল ইসলাম রিপন, দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক রাজু আহমেদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শিপন তালুকদার, রংপুর সংবাদপত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন, হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে রংপুর পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাজী মো. জুননুন বলেন, সকালের সূর্য ওঠার মতই সকালের বাণী ধীরে ধীরে উদিত হচ্ছে। একটি পত্রিকা বের করতে প্রকাশকের অনেক খরচ হয়। কিন্তু পত্রিকা বিক্রি করে সেই টাকাতো ওঠে না বরং আরও ভর্তুকি দিতে হয়। পত্রিকা প্রকাশের জন্য বিজ্ঞাপনের বিকল্প নেই। তাই আমি সকলকে অনুরোধ করছি আমরা সকলেই বিজ্ঞাপন দিয়ে সহযোগিতা করব। সবার সহযোগিতা পেলে আরও বহুদুর এগিয়ে যাবে এবং আগামীতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে সকালের বাণী। পত্রিকাটি চিরকাল বেঁচে থাক। আমরা যেন প্রতিদিন সকালে উঠেই সকালের বাণী হাতে পাই সেই প্রত্যাশা থাকবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক ( সুজন) এর রংপুর মহানগর সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, সকালের বাণী সত্য, সততা, সমৃদ্ধির যে প্রত্যয় নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে বর্তমান বাস্তবতায় এই তিনটিরই খুব অভাব। কিন্তু পত্রিকাটি বন্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে কখনোই মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেয়নি। এ যাত্রা অব্যহত থাকলে আমরা হয়তো আচিরেই দেখতে পাবো এটি আঞ্চলিকতার গন্ডি ভেঙ্গে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব পাবে। এটি টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত পৌঁছে যাবে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাে প্রধান তাবিউর রহমান বলেন, রংপুর থেকে প্রকাশ পেলেও সকালের বাণী পত্রিকাটির গেটআপ-মেকআপ জাতীয় দৈনিকের মত। এটি হাতে নিলে মনেই হয় না এটি আঞ্চলিক পত্রিকা। আমি নিজেও প্রথমে এটি জাতীয় দৈনিক মনে করেছিলাম। প্রিন্টাস লাইন দেখে নিশ্চিত হয়েছি এটি আসলে রংপুর থেকে প্রকাশিত পত্রিকা। সংবাদ পরিবেশনে নিরপেক্ষতা ধরে রেখে স্লোগানের সাথে এই পত্রিকার পথচলা সমৃদ্ধির দিকে যাবে এটাই পাঠক হিসেবে আমার আমাদের চাওয়া।
রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী বলেন, বর্তমানে সংবাদ পরিবেশনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হল ডিজিটাল প্লাটফর্ম। সকালের বাণীর ডিজিটাল প্লাটফর্ম গত এক বছরে যে জনপ্রিয়তা আর্জন করেছে তা আনেক জাতীয় সংবাদ মাধ্যম অর্জন করতে পারেনি। বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবের সময় আবু সাঈদের বিরল আত্মত্যাগের ভিডিও ধারণ ও প্রচার ছিল সাহসী সাংবাদিকতার অন্যতম উদাহরণ।
আলোচনা পর্বে সকালের বাণীর দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান অতিথিরা। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য সকালের বাণীর প্রশংসা করেন তারা। সত্য, সতত্যা ও সমৃদ্ধির প্রত্যয়ে সকালের বাণী যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। আলোচনা শেষে প্রথম বর্ষপূর্তির কেক কাটা হয়।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন রংপুর প্রেসক্লাবের দপ্তর ও যোগাযোগ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক সহসভাপতি আব্দুর রহমান মিন্টু, সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম সাথী, সাংবাদিক জাকির হোসাইন, ফটোসাংবাদিক কামরুজ্জামান সেলিম, রাশেদ হোসেন রাব্বী, চিত্রসাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন ডামি।
এছাড়াও দৈনিক সকালের বাণীর নির্বাহী সম্পাদক মেহেদী হাসান, অনলাইন ইনচার্জ ও স্টাফ রিপোর্টার বিপ্লব হোসেন অপু, মাল্টিমিডিয়া ইনচার্জ ও স্টাফ রিপোর্টার একেএম সুমন মিয়া, সাহিত্যপাতার বিভাগীয় সম্পাদক জাকির আহমদ, শিশুপাতার বিভাগীয় সম্পাদক মুস্তাফিজ রহমান, পীরগাছা প্রতিনিধি রবিউল আলম বিপ্লব, স্টাফ রিপোর্টার সেলিম সরকার, ভয়েস আর্টিস ইন্দ্রানি মুখার্জি, ওয়াহিয়া উর্মি, বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, কম্পিউটার ইনচার্জ (গ্রাফিক্স ডিজাইন বিভাগ) ফারুক হোসেন ফিরোজ, শামসুল ইসলাম বুলবুল, ভিডিও এডিটর মেহেদী হাসান মিল্টন, ক্যামেরা পারর্সন আশিক মিয়া, সার্কুলেশন ম্যানেজার স্বপন মিয়া, অফিস সহায়ক জুয়েল মিয়াসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সকালের বাণীর সম্পাদক ও প্রকাশককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে রংপুর প্রেসক্লাব, সিটি প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুর, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, মাহিগঞ্জ প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন রংপুর, টিসিএ রংপুর, রংপুর ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।