রংপুরের পীরগাছায় এক স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাত দল তার মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে নগদ দুই লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তবে স্বজনরা ঘটনাটিকে ডাকাতি হিসেবে দাবি করলেও পুলিশ বলছে, এটি ডাকাতি নয় বরং চুরির ঘটনা। এদিকে গত এক মাসে এলাকায় একাধিক চুরির ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের পূর্বপাঠক শিকড় গ্রামের রোকসানা ফেরদৌস স্বপ্নার (৫৫) বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের স্ত্রী ও মাঝবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
তার স্বজনরা জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে একটি ডাকাত দল রোকসানা ফেরদৌস স্বপ্নার বাড়িতে হানা দেয় এবং বাড়ির লোহার গ্রিলের তালা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় স্কুল শিক্ষিকা স্বপ্না একাই বাড়ির একটি কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। প্রথমে ডাকাত দল অন্য একটি রুমের দরজা ও আলমারির তালা ভেঙে ফেলে। এ সময় শব্দ পেয়ে স্কুল শিক্ষিকা স্বপ্না ঘুম থেকে জেগে ওঠে ডাকাত দলকে দেখে ফেলেন। তাৎক্ষণিকভাবে ডাকাত দল তাকে অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে নগদ দুই লাখ টাকা ও পাঁচ ভরি স্বার্ণালংকার হাতিয়ে নেন। তখন তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘এই আমি তো তোমাদের চিনি।’
এর পরেই ডাকাত দল তাকে কুপিয়ে জখম করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে গুরুতর আহত হন রোকসানা ফেরদৌস স্বপ্না। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রংপুর নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। স্বপ্নার দেবর মোসলেম উদ্দিন বলেন, এক ছেলে ও এক মেয়ের জননী রোকসানা ফেরদৌস স্বপ্না একাই বাড়িতে থাকেন। তার ছেলে কর্ম সূত্রে ঢাকায় ও মেয়ে বৈবাহিক কারণে শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছেন। এ সুযোগে ডাকাত দল মধ্য রাতে এ ঘটনা ঘটান। ছেলের বিয়েতে পুত্রবধূকে দেয়ার জন্য এ গহণা কিনেছিলেন। আর জমি বন্ধকের কারণে নগদ দুই লাখ টাকা বাড়িতে রাখা হয়েছিল।
এদিকে এক সপ্তাহ আগে কান্দি ইউনিয়নের পাঠক শিকড় গ্রামের অমূল্য চন্দ্রের বাড়ির নলকূপের পানিতে চেতনানাশক ওষুধ দেয়া হয়। সেই পানি পান করে বাড়ির সকলে অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এর সাত দিন আগে একই ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের নিলু ও হিরুর বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। তাদের বাড়ি থেকেও নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করা হয়।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, এটি ডাকাতির ঘটনা নয়, চুরির ঘটনা। তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে চুরি করার পর গৃহকর্ত্রী দেখে ফেলায় মাথায় আঘাত করে পালিয়ে গেছে চোরেরা। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।