1. [email protected] : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
  2. [email protected] : Sokaler Bani : Iqbal Sumon
  3. [email protected] : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
বাংলাদেশে নারীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে জরায়ু ও স্তন ক্যানসারে | দৈনিক সকালের বাণী
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ১০:২৪ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে নারীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে জরায়ু ও স্তন ক্যানসারে

সকালের বাণী ডেস্ক
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২১৫ জন দেখেছেন
  • ভায়া টেস্ট করানোর পরামর্শ
  • এইচপিভি ভ্যাকসিন নেওয়া অত্যাবশ্যক
  • প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত হলে ঝুঁকি কমে

বাংলাদেশে জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ৩৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এ রোগে। এছাড়া স্তন ক্যানসারও বাড়ছে। তবে এই দুই ক্যানসারের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যানসার নারীর মায়ের হলে তারও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে প্রতি ছয় মাস বা এক বছর পর ব্রেস্ট পরীক্ষা ও স্ক্যানিং করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

বাংলাদেশের ক্যানসার চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। তবে তা ক্ষেত্র ও ধরণ বিশেষে আবার নাগালের মধ্যে। ব্রেস্ট বা স্তন এবং জরায়ু ক্যানসারের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যানসার প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করতে পারলে তা সারিয়ে তোলা যায়। তবে এখন এ ক্যানসার যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য গত কয়েক বছর ধরে দেশের সব হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে এর ফ্রি টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার।

 

জরায়ুমুখ ক্যানসার (এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার)

জরায়ুমুখ ক্যানসার বা এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসার। এই রোগ নীরব ঘাতকের মতো নারীর প্রজনন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। এর প্রভাব বেশ গভীর হতে পারে। প্রাথমিক শনাক্তকরণসহ পরিচালনার জন্য এর প্রকৃতি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ শনাক্ত করতে পারলে ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এক সময় বয়স্ক নারীদের রোগ হিসেবে ধরা হলেও এখন অল্প বয়সীদেরও হচ্ছে। ফলে এটি সব বয়সী নারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) মাধ্যমে ছড়ানো এই জরায়ু ক্যানসারের অনেকগুলো কারণের মধ্যে মাসিকের হাইজিন না মানা, অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া, একাধিক যৌন সঙ্গী ও কিছুটা বংশগত কারণও রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে জরায়মুখ ক্যানসার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। নারীরা আক্রান্ত হলে তা শনাক্ত বা উপসর্গগুলো দেখা দিতেই চলে যায় এক যুগের বেশি। তাই এই ভাইরাস থেকে বেঁচে থাকার অন্যতম উপায় আগাম প্রতিরোধ।

 

 

এ রোগ নিয়ে কাজ করছেন ও সেবা দিয়ে যাচ্ছেন আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিস বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. ফারহানা আফরিন ফেরদৌসী।

তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে পারলে এই জরায়ু মুখের ক্যানসারটা নির্মূল করা সম্ভব। আমরা এ রোগের রোগী ৩৫ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশি পাচ্ছি। এটা সাধারণত বেশি হয়ে থাকে ৫৫ বছর থেকে তার ঊর্ধ্বে। আমরা এখন সকল সুস্থ মানুষকে স্ক্যানিং টেস্ট দিচ্ছি। এই ক্যানসার যার মাধ্যমে ছড়ায় তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের দেশের ৭ থেকে ১৫ বছরের মেয়েদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে।

 

 

জরায়ু ক্যানসারের প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

জরায়ুমুখ ক্যানসার হয় এক ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে, যার নাম প্যাপিলোমা ভাইরাস। সাধারণত এই ভাইরাসটি ছড়ায় ওই ভাইরাস আছে এমন কারও সাথে যৌন মিলনের ফলে। যৌন মিলনের সময় পুরুষদের কাছ থেকে নারীদের দেহে এই ভাইরাসটি ঢুকে যায়। তবে ভাইরাস শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসার হয় না। ক্যানসার হতে বেশ কয়েক বছর লাগতে পারে। জরায়ুমুখ ক্যানসারের মূল অসুবিধা হলো এটি শেষ পর্যায়ে গেলেই শুধু ব্যথা দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণগুলোকে অনেকেই মাসিকের মেয়েলি সমস্যা বলে মনে করেন। ক্যানসার যখন একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে যায় তখন রোগটা অনেকদূর ছড়িয়ে যায়।

ডা. ফারহানা আফরিন ফেরদৌসী বলেন, এ রোগ প্রতিরোধে পার্সোনাল হাইজিন অনুসরণ, নির্দিষ্ট সময় পর স্ক্যানিং করা প্রয়োজন। এছাড়া অল্প খরচে ভায়া টেস্টের মাধ্যমে এই রোগ শনাক্ত করা যায়। কেউ যদি বুঝতে পারে ভায়া টেস্ট তার পজিটিভ। তাহলে তাকে সাথে সাথে ক্যানসার হাসপাতালে আসতে হবে। হাসপাতালে ভর্তির পর তার আরও কিছু টেস্ট করাতে হবে। যে ভাইরাসের কারণে এই রোগ হয় সেটির আরেকটা পরীক্ষা করতে হবে। তখন বোঝা যাবে তার শরীরে ক্যানসার আক্রমণের পর্যায় কতদূর। অর্থাৎ তার আশঙ্কাটা কতটুকু।

তিনি আরও বলেন, ৪৫ বছর পর্যন্ত এইচপিভি ভ্যাকসিন নিতে পারেন নারীরা। ইতোমধ্যে এই ভ্যাকসিন প্রোগ্রাম স্কুল পর্যায়ে শুরু হয়েছে। স্কুলে ৭ থেকে ১৫ বছরের নারী শিক্ষার্থীদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের নারীরা অন্যান্য ক্যানসারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে জরায়ুমুখ ক্যানসারে।

 

ব্রেস্ট বা স্তন ক্যানসার

এই রোগে নারীদের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এই ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তবে বর্তমানে ১৫ থেকে ৩৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

এই ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায় না এ কথা ঠিক। তবে এর কারণে মৃত্যু রোধ করা যায়। ব্রেস্ট বা স্তন ক্যানসারের কারণে মৃত্যু রোধ করার উপায় হলো প্রাথমিক পর্যায়ে এটি শনাক্ত করা এবং সঠিক চিকিৎসা নেওয়া।

ডা. ফারহানা আফরিন ফেরদৌসী বলেন, জরায়ু ক্যানসারের পাশাপাশি বাংলাদেশের বেড়ে চলেছে ব্রেস্ট বা স্তন ক্যানসার। সাধারণত ৩৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীরা এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এখানে ক্যানসারের অন্যতম কারণ হাইপারটেনশন, ধূমপান, ডায়াবেটিস ও ফ্যামিলি হিস্ট্রি থেকেও এই রোগ হয়ে থাকে (মা, খালা, বোন)। বাচ্চাকে মায়ের বুকের দুধ না খাওয়ানো অন্যতম কারণ। তবে ব্রেস্ট ফিডিং করালেই যে এই ক্যানসার হবে না বিষয়টি এমনও নয়। এসব কারণ ছাড়াও ক্যানসারের আরও অনেক কারণ রয়েছে।

 

ব্রেস্ট ক্যানসারের চিকিৎসা

ডা. ফারহানা আফরিন ফেরদৌসী বলেন, এই ক্যানসারের চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই হচ্ছে। তবে ২০ বছরের ঊর্ধ্বে নারীদের অন্তত একবার করে পরীক্ষা করানো উচিত। বিশেষ করে যেসব নারীদের ফ্যামিলি হিস্ট্রি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের প্রত্যেকের ছয় থেকে এক বছর অন্তর অন্তর পরীক্ষা বা চেকআপ করানো উচিত। এছাড়াও সুস্থ প্রত্যেক নারীকে ২০ বছরের ঊর্ধ্বে হলে স্ক্যানিং করাতে হবে। তিনি আরও বলেন, এই ক্যানসারে কিছু পরীক্ষা অল্প খরচে করানো যায়। কিন্তু আবার কিছু পরীক্ষা রয়েছে খুব ব্যয়বহুল। ফলে অনেকের পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব হয় না।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত দৈনিক সকালের বাণী
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )