রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জাল স্বাক্ষরযুক্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট ইস্যুর অভিযোগ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। এ তদন্ত টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মীর হোসেন। তদন্তে তাঁকে সহায়তা করবেন আরও দুইজন অভিজ্ঞ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা জানিয়েছেন, গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ইস্যু করা একটি মেডিকেল সার্টিফিকেটে স্বাক্ষরের অসামঞ্জস্য ও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করবে এবং রিপোর্ট জমা দেবে, বলেন তিনি। অভিযোগের সূত্রপাত গঙ্গাচড়ার মান্দ্রাইন পূর্বপাড়া এলাকার আব্দুস সালামের স্ত্রী নুরজাহান খাতুনের একটি সার্টিফিকেটকে কেন্দ্র করে। নুরজাহান ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর (রেজি. নং ১৬৫০/০১) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন এবং চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র পান।
তবে আট মাস পর, ২০২৫ সালের ২৬ আগস্ট তিনি মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন, যেখানে স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে ডা. শ্যামলী আক্তারের, যিনি ২০২৫ সালের ১১ জানুয়ারি বদলি হয়ে অন্যত্র যোগ দেন। ফলে ওই স্বাক্ষরকে কেন্দ্র করে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে সার্টিফিকেট প্রস্তুতকারী নাছিমা বেগম বলেন, ডা. শ্যামলী আক্তার অনেক আগে বদলি হয়ে গেছেন। আমি সার্টিফিকেট তৈরি করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসারকে দিয়েছি। এরপর কীভাবে স্বাক্ষর হলো, তিনি ভালো বলতে পারবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসার জানান, বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে।তিনি সাংবাদিকদের বলেন “আপনি বুধবার অফিসে আসলে বিস্তারিত কথা হবে,”।
অভিযোগকারী আব্দুর সালাম দাবি করেন, এসআই আশরাফুল আমার কাছে মেডিকেল সার্টিফিকেট পক্ষে দেওয়ার কথা বলে টাকা চেয়েছিলেন। টাকা না দেওয়ায় উল্টো আমার বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি কোনো টাকার লেনদেনে জড়িত নই। আদালতে আমরা শুধুমাত্র আবেদনকারীর প্রদত্ত সার্টিফিকেট জমা দিই।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।