1. onlinesokalerbani@gmail.com : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
  2. iqbalbarabil80@gmail.com : Sokaler Bani : Iqbal Sumon
  3. sharifuzzamanmdiqbal@gmail.com : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
মামলার রানী কোহিনুর সিনেমাকেও হার মানায়! | দৈনিক সকালের বাণী
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন

মামলার রানী কোহিনুর সিনেমাকেও হার মানায়!

আমিরুল কবির সুজন,মিঠপিুকুর(রংপুর)
  • আপলোডের সময় : শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪৭৪ জন দেখেছেন

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কোহিনুর বেগম (৩৫) নামে এক নারীর করা একের পর এক মিথ্যা মামলায় নাজেহাল হয়ে পড়েছে ৪টি পরিবার ও গ্রামবাসীরা। ওই নারীর হুমকি আর মিথ্যা মামলার ভয়ে কোণঠাসা সমাজের লোকজন। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই হয়ে যায় মামলার আসামী।

সিনেমার স্টাইলে সাজানো নাটকে করেন মামলা। তার রয়েছে নিজস্ব ডাঙ্গা বাহিনী। সেই বাহিনীর সদস্যরাই প্রত্যেকটি মামলার স্বাক্ষী। কোহিনুরের একের পর এক এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। মামলাবাজ কোহিনুরকে থামাতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের নিরপেক্ষ তদন্তসহ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি গ্রামবাসীর। অভিযুক্ত কোহিনুর বেগম উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের রুপসী গ্রামের আজিজুর রহমানের স্ত্রী।

সরেজমিনে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে আজিজুর রহমান ঢাকায় থাকাকালীন সময়ে কোহিনুর বেগমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গ্রামের বাড়িতে এসে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস শুরু করেন আজিজুর। কিন্তু গ্রামে আসার পর স্ত্রী কোহিনূর বেগম একের পর এক অযৌক্তিক কর্মকাণ্ডে জড়াতে থাকেন।

 

মূল ঘটনার সুত্রপাত জমিকে কেন্দ্র করে। বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত রাণীপুকুর এরশাদমোড় এলাকায় মমতাজ আলী (৯৫) এর ৮২ শতক জমি রয়েছে। পৈতৃকসুত্রে সেই জমির ১৯ মতকের মালিক ছোট ছেলে আজিজুর রহমান।

কিন্তু আজিজুর কৌশলে তার স্ত্রী কোহিনুর বেগমকে জমিটির মূল ফটক রাস্তার সাথে দিক উল্লেখ করে জমি লিখে দেন। এতে তার অপর দুই ভাই আশরাফুল ইসলাম (৫৫) ও আনিছুর রহমান (৪৫) প্রতিবাদ জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন কোহিনূর। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার সমাধানের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়।

এরপর তাদের কোণঠাসা করতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আসছেন কোহিনূর বেগম। বিষয়গুলো নিয়ে গ্রামবাসীরা কেউ মুখ খুললেই তাদেরকেও করেছেন আসামী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোহিনূর জমিজমা, হামলা, প্রতারণা ও ধর্ষণের অভিযোগসহ এ পর্যন্ত ৭ টি মামলা এবং থানায় প্রায় ১০ টি অভিযোগ করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকে জানান, ওই পরিবারের বিষয়ে গ্রামবাসী সবাই জানে। ওদের ছোট ভাই আজিজুর চাইলেই সবকিছুই সমাধান সম্ভব। কিন্তু ওরা স্বামী-স্ত্রী মিলে যে চক্রান্ত শুরু করেছে তাতে ওই পরিবারের বাকি সবাই ৪/৫ টা করে মামলার আসামী। মামলা আর হামলার চাপে কখন যে কে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে বলা মুশকিল। ওই কোহিনূর খুবই দুর্র্ধষ। কেউ যদি যৌক্তিক কোন বিষয়ও বলে আর সেটা তার বিপক্ষে গেলে তাকেও মামলার আসামী করে। সেই ভয়ে গ্রামের কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায় না।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, কোহিনুর ও তার দুই ভাসুরসহ তাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে একাধিকবার বসা হয়েছিল। কিন্তু বৈঠকে আপোষ মিমাংসার আলোচনা হলেও পরে আবার কোন না কোন পক্ষ সেটা মানতে চায় না। এছাড়াও ওই মহিলার হুমকিতে সবাই কোণঠাসা হয়ে পড়ায় কেউ আর ঝুঁকিও নিতে চাচ্ছে না।

ভুক্তভোগী আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমরা একের পর এক মামলায় সর্বশান্ত হয়ে গেছি। মিথ্যা মামলার বোঝা নিয়ে আদালতে যাওয়া-আসা করতে সময় ও টাকা দুটোই হারাচ্ছি। জমিতে চাষাবাদ করতে পারছিনা। পরিবারের ছেলেমেয়েসহ সবাইকে আসামী করেছে। বাচ্চাদেরও লেখাপড়া হচ্ছে না।

এভাবে কোন জীবন চলে? ভুক্তভোগী আনিছুর রহমান বলেন, ওর মামলায় আমার বড় ভাই আশরাফুলকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। আমি আব্বাসহ বাড়ির বাইরে দাড়িয়ে আছি হঠাৎ ওই মহিলা নিজের বাড়ির ভেতর থেকে চিৎকার করে থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দেয়। বিষয়টির তদন্তও করেছে পুলিশ। এভাবে আর কতদিন! একদিকে আমার ভাইকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় তার চিন্তা, অপর দিকে ওই মহিলার সাজানো মামলার ভয়।

 

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কোহিনুর বেগমের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এ বিষয় আমি কিছু বলতে পারবোনা। এখানে অনেক বিষয় আছে যেগুলো মোবাইলে বলা যাবে না। দেখা হলে বলবো।

মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কেউ যদি এভাবে মিথ্যা মামলা করেন, তা হলে সেটি অব্যশই অন্যায় কাজ করেছেন। যেই হোক না কেন এমন কাজ করতে পারেন না। ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ও মামলাগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত দৈনিক সকালের বাণী
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )