পঞ্চগড়ের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা যেমন পাক্ষি খেলা, লাঠি খেলা, রশি টানাটানি, বৌ-চি, তৈলাক্ত কলাগাছ খেলা আর ডাংগুলী খেলা। আকাশ সংস্কৃতির যুগে এসে এই খেলাগুলো প্রায় ভুলতে বসেছিল পঞ্চগড়ের মানুষ। আর এই ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা দেখতে মেতে উঠেছিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়য়ের হাজারও মানুষ।
বুধবার সকাল থেকে দিনব্যাপী পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এসব খেলাধুলার আয়োজন করে সদর উপজেলা প্রশাসন। জেলা সদরের হেলিপ্যাড মাঠে আয়োজন করা হয় এসব গ্রামীণ খেলাধুলার প্রতিযোগিতার। বিকেলে নিজেই ডাংগুলী খেলতে মাঠে নেমে পড়েন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী। সন্ধ্যায় এসব খেলার বিজয়ীদের মাঝে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন তিনি। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সদর উপজেলার পদস্থ কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান আল ইমরান খানসহ ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। দুপুরের কড়া রোদ উপেক্ষা করে এসব খেলা উপভোগ করেন হাজারও দর্শক।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার বলেয়া পাড়া গ্রামের হাশেম আলী জানান, আমরা ছোট বেলায় এসব খেলা দেখেছিলাম। লাঠি খেলা ছিল আমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলা। হিজরী মহররহম মাস আসলেই গ্রামে গঞ্জে দেখা যেত লাঠি খেলা। যুবক থেকে বৃদ্ধ; সবাই নেমে পড়ত লাঠি খেলায়। কয়েকটি দল অংশগ্রহণ করত এই খেলায়। বিজয়ী দলকে পুরস্কার দেয়া হত গরু অথবা খাসি ছাগল। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই খেলা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে গ্রামীণ অন্যান্য খেলাও। আমি ধন্যবাদ জানাই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে। আগামী প্রজন্মের কাছে এসব খেলা টিকিয়ে রাখার জন্য তারা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। আমি আশা করব প্রতি বছর যেন এমন আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা, কৃষ্টি-কালচার আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যেন হারিয়ে না যায় সে জন্য এই উদ্যোগ। আমরা চেষ্টা করছি এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দর্শকরা যেমন আনন্দ পাবে তেমনি আমাদের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা এই খেলাধুলা নিয়ে আনন্দ পাবে। আজ হেলিপ্যাড মাঠে দিনব্যাপী এসব খেলা বহু মানুষ উপভোগ করেছে। পঞ্চগড় সদর উপজেলায় এমন আয়োজন পর্যায়ক্রমে অন্যান্য উপজেলাতেও আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানান।