রংপুরের পীরগাছায় পাঁচ দাখিল পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজনকে অন্যের বদলি হিসেবে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে ও একজনকে এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখার কারণে বহিষ্কার করা হয়। তবে বদলি পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে শুধুমাত্র বহিষ্কার করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও সচেতন মহল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এতে পীরগাছায় হাজী ছফের উদ্দিন সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্র ও পাওটানা হাট ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। প্রথম দিন কোরআন মজিদ বিষয়ে পরীক্ষায় হাজী ছফের উদ্দিন মাদ্রাসা কেন্দ্রে শারমিন আক্তার (রোল ১৭৬৬৪৮) ও মুন্নি আক্তার (রোল ১৭৬৬৫০) ভুয়া পরীক্ষার্থী হিসেবে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে পাওটানা হাট ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা কেন্দ্রে পাওটানা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার মুন্নি আক্তার (রোল ৩৫৪৮৫৪) ও সুইটি আক্তার (রোল ৩৫৩৮৫৩) দুই পরীক্ষার্থীর বড় বোন বদলি হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া রংনাথ মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে মোবাইল সঙ্গে রাখার কারণে বহিষ্কার করা হয়। তবে বদলি পরীক্ষার্থী বহিষ্কার করা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আবু বকর বলেন, ‘আঞ্চলিক মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে বদলি পরীক্ষার্থী শনাক্ত করে তাদের বহিষ্কার করেন।’ পাওটানা হাট ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব আবু বকর সিদ্দিক বদলি পরীক্ষার্থীদের বিষয়টি স্বীকার করে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কেন্দ্রের সহকারী সচিব চর তাম্বুলপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট ওলি আহমেদ বদলি পরীক্ষার বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এক পর্যায়ে নিউজ না করার জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের ম্যানেজ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন ওলি আহমেদ।
অভিভাবক আনছার আলী বলেন, বদলী পরীক্ষা দিতে এসে ধরা পড়েছে। তাকে আইনে সোপর্দ করা উচিৎ ছিল। এভাবে বহিষ্কার করে দায় এড়ানো ঠিক না।দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, ‘দুই বদলি পরীক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা সুপার ও অফিস সহকারী বদলি পরীক্ষা দিতে সহযোগিতা করার কথা স্বীকার করেছেন।’
এদিকে কেন্দ্রগুলোর আশেপাশে ফটো¯ট্যাট মেশিনের দোকান খোলা থাকছে। সেগুলো থেকে প্রশ্নোত্তর ফটোকপি করে কেন্দ্র সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে সাংবাদিকরা বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি অবিশ্বাস করেন। পরে ভিডিও কলে তাকে দোকান খোলা দেখানো হলে তিনি বিষ্ময় প্রকাশ করেন।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, ‘বদলি পরীক্ষার্থীদের আটক করা হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। শুধু বহিষ্কার করা যথেষ্ট নয়।’