গাইবান্ধায় ২৫ দিন পর আদালতের নির্দেশে জান্নাতি বেগম (২৭) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ। সোমবার সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের বাড়ির পাশের কবর থেকে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। জান্নাতি বেগম ওই গ্রামের সোহরাব হোসেনের স্ত্রী। জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জসিম উদ্দিন ও সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক আলম বাদশাসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সুত্রে জানা যায়, ১০ বছর পূর্বে ভালোবেসে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুক কানুপুর ইউনিয়নের তালুককানুপুর গ্রামের সালজার রহমানের মেয়ে জান্নাতি আকতারের সঙ্গে সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে সোরহার মিয়ার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে আট বছর ও ছয় বছরের দুইটি সন্তান রয়েছে।
চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে জান্নাতি বেগম মারা যায়। পরে ঘটনাস্থলে এসে জান্নাতির বাবা জানতে পারেন, জান্নাতি বেগমকে নির্যাতন করে হত্যা করে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছে বলে অপপ্রচার চালান স্বামীর বাড়ির লোকজন। পরে জান্নাতির বাবা সদর থানার পুলিশকে জানায়। ওই সময় পুলিশ মামলা নিতে অপারকতা প্রকাশ করে। নিরুপায় হয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর জান্নাতির মামা ছকু মিয়া বাদি হয়ে স্বামী সোরহাবসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়।
জান্নাতির বাবা সালজার রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে (জান্নাতি আকতার) ছোট থেকে তাঁর মামার বাড়ি বল্লমঝাড় মধ্যপাড়ায় থাকতেন। এসময় সোরহাবকে ভালোবেসে বিয়ে করে জান্নাতি। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে যৌতুকের জন্য প্রায়ই নির্যাতন করতো স্বামী সোরহাব মিয়া। মেয়েকে নির্যাতের ভয়ে জমি, সোনাদানাসহ অনেক টাকা দিয়েছি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। আমার একমাত্র মেয়েটাকে মেরেই ফেলল। আমি এর বিচার চাই। তিনি আরও বলেন, মেয়েটার নামাজে জানাজাও করতে পারিনি। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু দেখিয়ে তরিঘড়ি করে রাত ২ টার দিকে মরদেহ দাফন করে।
এদিকে, সোরহাব মিয়ার বাড়ির লোকজনের দাবি, টেলিভিশনের সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গুরুতর আহত হয় জান্নাতি বেগম। তাকে বাঁচাতে গিয়ে কাকলি বেগম নামের এক গৃহবধু আহত হয়েছিল। পরে জান্নাতিকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
সদর থানার (ওসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রতিবেদনে মৃত্যুর রহশ্য জানা যাবে।
Related