ছয় ঋতুর বৈচিত্রের এই দেশে ঋতুর বৈচিত্র অনুভবে গ্রামবাংলার প্রকৃতির কোন বিকল্প নেই। শীত ও বর্ষা কাল স্পষ্টভাবে বোঝা গেলেও অন্যান্য ঋতুর বৈচিত্র খুব একটা দেখা যায় না। তবে নদ-নদী, চর এলাকায় কাশফুল ফুটলেই বোঝা যায় শরৎ এসেছে। মেঘ-রৌদ্রের লুকোচুরির মাঝে প্রকৃতিতে যেনো এক নৈসর্গিক মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয় শরৎ।
হিন্দু ধর্মীয় দেবী দুর্গার আগমন বার্তা আর নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে প্রকৃতিতে আগমন ঘটে শুভ্র শরতে। কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি আবার কখনোবা মেঘলা আকাশ। ভাদ্র ও আশ্বিন মাস নিয়ে ঋতু পরিক্রমার তৃতীয় ঋতু শরৎকাল। মধ্য আগস্ট থেকে মধ্য অক্টোবর পর্যন্ত শরৎ ঋতুর পথচলা। শুভ্রতার প্রতীক হয়ে শরত আসে। দূর্বাঘাসে শিশিরের আলপনা জাগে।
সরেজমিনে তিস্তা রেল ও সড়ক সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা নদী পাড়ে শুভ্রতা ছড়াচ্ছে কাশফুল। তিস্তা নদীর দুই পাড়ে ফুটেছে সারি সারি কাশফুল। প্রকৃতির মাঝে মেলে ধরেছে আপন রূপ। সাদা কাশফুল যেন প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে ডাকে। বৈচিত্রময় কাশফুল আর তিস্তা নদীর জলকেলি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে দলবেঁধে লোকজন ঘুড়তে আসে।
বিকালে লোক সমাগম একটু বেশি হয়। বেশী কাশবন দেখেতে তিস্তা সেতু এলাকা থেকে নৌকাযোগে যেতে হয় ১০নং ঘাটের কাশ বাগানে। তিস্তা রেল ও সড়ক সেতু এলাকাটি পর্যটক স্পট না হওয়া সত্বেও কাশফুলের ছোঁয়া, নৌভ্রমণ কে কেন্দ্র করে প্রকৃতি প্রেমীদের আগমনে মূখর হয়ে উঠে প্রতিটি বিকেল। নদী আর কাশফুলের সৌন্দর্যের সাথে ছবি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
তিস্তার চরে সবুজের বুকে ফুটেছে কাশফুল। নীল আকাশে সাদা মেঘের সঙ্গে নদীপাড়ে শুভ্র কাশফুলের মেলবন্ধন কাছে টানে প্রকৃতি প্রেমীদের। শরৎ মানেই কাশফুল, নীল আকাশ আর দিগন্তজোড়া সবুজের সমারোহ। শহরের কোলাহল থেকে নিরিবিলি বিকালে কিছুটা সময় কাটাতে তিস্তা পাড়ে কাশফুল দেখতে আসেন অনেকেই। তিসতা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, গ্রাম বাংলার প্রকৃতি পাল্টে যাচ্ছে দিন দিন। উজার হচ্ছে গাছপালা। ভাঙ্গনের ফলে নদী পাড়ের মাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। ফলে নদীপাড়ের ভারসাম্য হারাচ্ছে।
শরতের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। তারপরও তিস্তা নদীপাড়ে প্রতিবছরই কাশফুল ফোটে। এবছরও চর জুড়ে ফুটেছে শুভ্র নরম কাশফুল। উত্তর রাজিব গ্রামের বিজয় চন্দ্র জানান, গ্রাম বাংলার প্রকৃতি পাল্টে যাচ্ছে দিন দিন। ভরাট হচ্ছে জলাশয়। নদীর পাড়ের মাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে বালুখেকোদের কবলে। প্রতিবছরই শুকনো মৌসুমে নদীর পাড়ে মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করছে অনেকেই। এতে করে নদীপাড়ের ভারসাম্য হারাচ্ছে। এদের কবলে পড়ে কাশফুলও হারিয়ে যেতে বসেছে। অতীতের মতো কাশফুল চোখে পড়ে না বর্তমানে। প্রকৃতিতে শরৎ আসে নতুন রূপে। ভোরে হালকা শিশির এবং মাঝেমধ্যে হালকা কুয়াশাভাব জানান দেয় দুয়ারে আসছে শীত !