ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের পূর্ব মহেশালী গ্রামে ভুট্টা খেত থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের মায়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের তৎপরতায় সোমবার (২৪ মার্চ) গভীর রাতে নবজাতকের মায়ের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে স্থানীয় প্রতিনিধির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুট্টা খেতের পাশেই ওই নারীর বাবার বাড়ি। নবজাতকের মা জানান, ১০ বছর আগে শহরের গোয়ালপাড়া গ্রামের রায়হান নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে থাকলেও তিন বছর আগে রায়হান লিঙ্গ পরিবর্তন করে ট্রান্সজেন্ডার হন এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকেই সন্তানদের নিয়ে কঠিন অভাব-অনটনের মুখে পড়েন ওই নারী।
নবজাতককে ফেলে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “শহরের এক ভাড়া বাসায় থাকি আমি। টানাপোড়েনের সংসারে গত বছর একটি সন্তান জন্ম হয়েছিল। তখন দালালের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করি, তবে নিজের হাতে পেয়েছিলাম মাত্র ২০ হাজার টাকা। এবার আবারও অন্তঃসত্ত্বা হয়ে বাবার বাড়িতে আসি। সোমবার ভোরে প্রসব ব্যথা উঠলে পাশের ভুট্টা খেতে গিয়ে সন্তান জন্ম দিই। কিন্তু দারিদ্র্য আর সন্তানের পিতৃপরিচয় না থাকায় অসহায় হয়ে নবজাতকটিকে ফেলে চলে আসি।”
এদিকে, স্থানীয়রা নবজাতককে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলামের কাছে নিয়ে যান। ইউএনও শিশুটিকে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। নবজাতক বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম জানান, “আমরা নবজাতকের মাকে শনাক্ত করেছি। ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিশুটির সুরক্ষায় যা যা প্রয়োজন, প্রশাসন তা করবে।”