বৃহস্পতিবার (০৩ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁও মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের ঠাকুরগাঁও শহর শাখা আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সিবগাতুল্লাহ বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা সকলেই নিপীড়িত নির্যাতিত ছিলাম, যার ফলে আমাদের মধ্যে একটি ঐক্য ছিল। আমরা সবাই ফ্যাসিবাদী যুগের পতন চাইছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের পতনের পর বাংলাদেশের সংবিধানে একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পরেও আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, যাতে অন্য কোনো ফ্যাসিবাদ যেন আবার নতুন করে প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে। কিন্তু ছাত্রদল মনে করছে তারা দ্রুত ক্ষমতায় আসবে। ইতিপূর্বে ছাত্রলীগ যেভাবে সব জায়গায় একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করছিল, তাদের অতীত রাজনীতি থেকে এরকম একটি উদ্দেশ্য থাকতে পারে।”
ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে “রগ কাটার” অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে কোনো ঘটনা ঘটলেই আওয়ামী লীগ বলতো এটা শিবির করেছে। আবরার ফাহাদ ও বিশ্বজিতের ঘটনা তার প্রমাণ। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিবিরের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তারা শিবিরের বিভিন্ন কার্যক্রম দেখতে পাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “বিপ্লব নিয়ে শিবিরের আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রকাশনা উৎসবের মাধ্যমে শিবির ছাত্রদের উপযোগী কার্যক্রম করছে। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলো সেভাবে অভ্যস্ত হতে পারছে না। যার ফলে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।”
সিবগাতুল্লাহ আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসনামলে বিডিআর হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে শাপলা চত্বরের গণহত্যা, সাঈদী সাহেবের রায়ের পরে গণহত্যা এবং জুলাই বিপ্লবের গণহত্যার বিচার হওয়া উচিত। তাহলে বাংলাদেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। সংস্কারের পাশাপাশি বিচার হওয়া জরুরি। সংস্কার ও বিচার হওয়ার পর নির্বাচন হলে সবার জন্য ভালো হবে।”
তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে কেউ যেন ফ্যাসিবাদী হয়ে না ওঠে, সেটাই আমাদের চাওয়া। কেউ ফ্যাসিবাদী হলে বিগত আওয়ামী লীগের মতো বিএনপি, ছাত্রদল, শিবিরসহ অন্যান্য সংগঠনগুলো নির্যাতিত হবে। আমরা যদি ক্ষমতার পালাবদলের একটি সংস্কৃতি তৈরি করতে পারি, যেখানে কেউ কাউকে নির্যাতন করবে না, তাহলে বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশ হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ দেলওয়ার হোসেন, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোঃ আলমগীর হোসেন, ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মোঃ কফিল আহমেদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।