নীলফামারী-০১(ডোমার-ডিমলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরি তুহিনের মুক্তি দেয়া না হলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করা হবে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। প্রয়োজনে সড়ক পথ, রেলপথ অবরোধ করে রাখা হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে (৬মে) নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে জেলা বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এমন ঘোষণা দেয়া হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মুক্তার হোসেন, নীলফামারী পৌর বিএনপির সভাপতি মাহবুব উর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আল মাসুদ চৌধুরি, ডোমার উপজেলা বিএনপির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, ডিমলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনোয়ার হোসেন, জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ময়নুল ইসলাম, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সোয়েম।
বক্তারা উল্লেখ করে বলেন, তুহিন ভাই শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি জিয়া পরিবারের অন্যতম সদস্য। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও তারেক রহমানের খালাতো ভাই।
সাবেক সংসদ সদস্য এবং নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। উত্তরাঞ্চলের প্রিয় নেতা। তাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। তার হাত ধরেই এগিয়েছে নীলফামারী। রাজনৈতিক আক্রোশে তিনি আজ নির্যাতিত।
সমাবেশে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সোয়েম বলেন, দুটি মামলায় আমাদের প্রিয় নেতা তুহিন ভাইকে সাজা দেয়া হয়েছে আদালত থেকে।
মামলা দুটির কোন সত্যতা নেই, কোন ভিত্তি নেই, কোন সাক্ষ্য প্রমাণ নেই। রাজনৈতিক কারণে ফ্যাসিস্ট আমলে শেখ হাসিনা মামলা দুটি করেন। এই মামলায় সাজা হতে পারে না। আদালত থেকে ন্যায্য বিচার পাননি তিনি।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম বলেন, এই সরকারও নিরপেক্ষ আচরণ করছে না বিএনপির সাথে। আওয়ামী লীগ আমলেও নির্যাতিত, এখনো নির্যাতন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
আমরা স্পষ্ট ভাষায় সরকারকে বলে দিতে চাই, যদি দ্রæত আমাদের প্রিয় নেতা তুহিন ভাইকে মুক্তি দেয়া না হয়, তাহলে নীলফামারী-প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে লং মার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ঘেরাও করে রাখা হবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। প্রয়োজনে সড়ক পথ, রেলপথ অবরোধ করে সবকিছু অচল করে দেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার বলেন, ফ্যাসিস্ট পালিয়েছে কিন্তু এখনো তাদের দোসররা রয়ে গেছে। তাদের কারণে নিরপেক্ষ আচরণ পাচ্ছেন না বিএনপি নেতা কর্মীরা। আদালতেও দোসর থাকায় বিচার কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের উদ্দেশ্যে আলমগীর সরকার বলেন, দেখে যান নীলফামারীর মানুষ তুহিন ভাইকে কত ভালোবাসে। নীলফামারীর আনাচে কানাচে মানুষ আর মানুষ অপেক্ষা করছে তাকে বরণ করে নিতে।
আমরা অপেক্ষা করতে চাই না, দ্রুত মুক্তি দেন।
সমাবেশ শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস বরাবর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন বিএনপি নেতারা।
এর আগে জেলা, উপজেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন জেলা শহরের পৌর বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।