


নীলফামারী জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নে অবস্থিত সিংদই দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. ফজলুল করিম ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মো. হেদায়েত আলী শাহ ফকিরের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তদন্তে পক্ষপাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে(১৪অক্টোবর) নীলফামারী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিয়োগ বানিজ্য, মাদ্রাসার নামে থাকা জমির উৎপাদিত ফসলের টাকা অত্মসাৎ, মাদ্রাসার ভূর্তকীর অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত ১৬ এপ্রিল জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করা হয়।
মাদ্রাসা সুপার ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি হেদায়েত আলী শাহ ফকিরের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষে ওই অভিযোগটি দাখিল করেন, মো. সাদ্দাম আলী। জেলা প্রশাসক অভিযোগ তদন্তে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সদর উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠণ করেন। তদন্ত কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই তদন্ত পক্ষপাত দাবি করে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেন ওই মাদ্রাসার অভিভাবকবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক অভিভাবক সদস্য মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘সিংদই দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার ৩ একর জমির ফসলি টাকা ২৫ বছর যাবত আত্মসাৎ করা হচ্ছে। অদ্যাবধি জমির ফসল বিক্রয়ের টাকার কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। ২৫ বছরে আনুমানিক ২০ লক্ষাধিক টাকা ফসল বিক্রয় থেকে আসে। ওই টাকা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা না করে নিজ হাতে রাখেন। এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা একাডেমিক সুপারভাইজার গাজিউর রহমান তদন্তে কোনো প্রকার তথ্য দাখিল করেন নাই। মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষকেরা সুপারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উপস্থাপন করলেও তদন্ত প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের জমির মাটি বিক্রয় করে টাকা আত্মসাতের বিষয়টিও তদন্ত প্রতিবেদনে নেই।’ এমনি নানা অভিযোগ করা হয় ওই সংবাদ সম্মেলনে।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার মো. ফজলুল করিম বলেন, ‘তারা যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মাদ্রাসার নামে ৫৬ সালে জমির দলিল হয়। আমি ওই মাদ্রাসায় যোগদান করি ১৯৯৪ সালে। মাদ্রাসার বেশ কিছু জমি অবৈধ দখলে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আছে ৬০ শতাংশ জমির মধ্যে। এখানে ৩ একর জমি লিজ দেয়ার প্রশ্নই আসে না। তাদের অভিযোগের তদন্ত হয়েছে। সেই তদন্তে তাদের অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তারা এখন নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছেন।’
জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান একাডেমিক সুপারভাইজার মো. গাজিউর রহমান বলেন, ‘তদন্তে দেখা যায় কিছু জমি নিয়ম বহির্ভূতভাবে লিজে দেওয়া ছিল। সেটি ইউএনও স্যার পরে ঠিক করে দিয়েছেন। এর বাহিরে বড় রকমের কোনো দুর্নীতির প্রমান পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া তাদের কিছু জমি মাদ্রাসার দখলে নেই। প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি জমিতে রয়েছে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব কিছু উল্লেখ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এখানে পক্ষপাতিত্যের প্রশ্নই আসে না।’ সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক দাতা সদস্য সাদ্দাম আলী, সাবেক অভিভাবক সদস্য আহমদ আলী, রজব আলী, ইউসুফ আলী প্রমুখ।