1. [email protected] : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
  2. [email protected] : Sokaler Bani : Iqbal Sumon
  3. [email protected] : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
দেশীয় গ্যাসে জোর ১৫০ কূপ খননের পরিকল্পনা পেট্রোবাংলার | দৈনিক সকালের বাণী
রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৪ অপরাহ্ন

দেশীয় গ্যাসে জোর ১৫০ কূপ খননের পরিকল্পনা পেট্রোবাংলার

সকালের বাণী ডেস্ক
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২৪ জন দেখেছেন

চলমান জ্বালানি সংকট কাটাতে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছে সরকার। নতুন অনুসন্ধান ব্লক চিহ্নিত করা, পুরোনো গ্যাসক্ষেত্র পুনর্মূল্যায়ন এবং উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশীয় উৎস থেকে উৎপাদন বাড়লে শিল্প, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সার কারখানায় জ্বালানি সরবরাহ স্থিতিশীল হবে। এতে ঘন ঘন গ্যাস সংকটের ঝুঁকি কমবে এবং ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমে আসবে।

gas-2দীর্ঘমেয়াদি টেকসই সমাধানকে মূল লক্ষ্য ধরে আমদানি বাড়ানোর পরিবর্তে নিজেদের সম্পদ কাজে লাগিয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের জ্বালানি সংকট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে এবং রিজার্ভের ওপর চাপও হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ এলএনজি আমদানিতে প্রতিবছর বিপুল ডলার ব্যয় হয়। স্থানীয় গ্যাস উত্তোলন বাড়ালে সেই ব্যয় সাশ্রয় হবে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিকে স্বস্তি দেবে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বিগত সরকারের ভুল নীতি ও আমদানি-নির্ভরতার কারণে জ্বালানি খাত এক দশক পিছিয়েছে। শিল্প ও বিশেষজ্ঞদের দাবি, আগেই দেশীয় উত্তোলনে গুরুত্ব দেওয়া হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতো না।

১৫০ কূপ খননের পরিকল্পনা

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, উপকূলীয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন ব্লকে নতুন অনুসন্ধান কাজ জোরদার করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৫০টি এবং ২০২৬-২৮ সালের মধ্যে আরও ১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

জ্বালানি বিভাগ বলছে, দেশের যেসব খনি ইতোমধ্যে উৎপাদনে রয়েছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। খনিগুলোর আশপাশের একই ধরনের গ্যাস অনুসন্ধান জোরদার করা হবে। এতে করে দৈনিক অন্তত ৬০০ থেকে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট নতুন দেশীয় গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

পেট্রোবাংলার নতুন অগ্রগতি

বর্তমান জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে পেট্রোবাংলা।

বাপেক্স জানিয়েছে, জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপে সফলভাবে বাণিজ্যিক গ্যাস পাওয়া গেছে। এটি ব্লক-৮ এ দেশের প্রথম গ্যাস আবিষ্কার। রিজার্ভ নিরূপণে আরও দুটি কূপ খননের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

 

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল) জানিয়েছে, সিলেট–১০ কূপ খননের সময় তেলের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এর বাণিজ্যিক উত্তোলন নিশ্চিত করতে সিলেট–১২ কূপ খননের কাজ শুরু হয়েছে।

ভোলা গ্যাসক্ষেত্রে ১৯টি নতুন কূপ খননের পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন। এখানকার গ্যাস স্থানীয় শিল্প এলাকায় সরবরাহ করলে দক্ষিণাঞ্চলে নতুন কর্মসংস্থান ও শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

gas-3বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) তিতাস ও বাখরাবাদে দুটি এবং বাপেক্স শ্রীকাইল ও মোবারকপুরে দুটি গভীর কূপ খননের কাজ করছে। বিভিন্ন ব্লকে সাইসমিক ডাটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণও চলছে।

খনন ত্বরান্বিত করতে বাপেক্সের নিজস্ব ৫টি রিগের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক আরও ৩টি রিগ যুক্ত হয়েছে। ২৭ নভেম্বর ২০২৫ থেকে তিতাস-২৮ উন্নয়ন কূপে খনন শুরু হচ্ছে। আগামী জানুয়ারিতে তিতাস-৩১ ডিপ অনুসন্ধান কূপে কাজ শুরু হবে। ভোলায় আরও পাঁচটি কূপ খননের জন্য চুক্তি চূড়ান্তের পথে।

পেট্রোবাংলার উপ-মহাব্যবস্থাপক তারিকুল ইসলাম খান জানান, ‘দেশীয় গ্যাস সরবরাহ বাড়লে জ্বালানি সংকট নিরসনে তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমরা চলতি অর্থবছরের মধ্যে ৫০টি এবং ২০২৮ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করব। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ব্লকে অনুসন্ধান জোরদার করা হয়েছে। সঠিকভাবে কাজ করা গেলে শুধু ভোলার ১১টি কূপের খনন শেষ হলে দৈনিক প্রায় ১৪৩ মিলিয়ন ঘনফুট নতুন গ্যাস উৎপাদন সম্ভব হবে।’

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলনের কথা বলে আসছি। কিন্তু বিগত সরকার আমাদের কথায় কান দেয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দেরিতে হলেও বিষয়টির দিকে নজর দিয়েছে। আমরা মনে করি এর মাধ্যমে দেশের জ্বালানি সংকট সমাধান সম্ভব। এভাবে আমদানি নির্ভরতা দেশের জ্বালানি খাতকে দুর্বল করে।’

বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক সমিতির সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, ‘ভুলনীতির কারণে আজ আমাদের বড় খেসারত দিতে হচ্ছে। উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানির ফলে ফরেন রিজার্ভে বাড়তি চাপ পড়ছে।’

সম্প্রতি এক আলোচনায় ভূতত্ত্ববিদ বদরুল ইমাম বলেন, ‘১০ বছর ধরে গ্যাস অনুসন্ধান না করে আমদানির পথে হেঁটে বাংলাদেশকে এখন জ্বালানি খাতে খেসারত দিতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সরকারকে বারবার বলা হয়েছে দেশের ভূ-গভীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস আছে। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে কান না দিয়ে এলপিজি আমদানির পথে হেঁটেছে। এতে করে জ্বালানি খাতে এক দশক পিছিয়ে গেছে দেশ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত দৈনিক সকালের বাণী
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )