মিথ্যা অপবাদ দিয়ে রংপুরের বদরগঞ্জে এরশাদুল হক নামে (১৭) প্রতিবন্ধী এক কিশোরকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের বৈরামপুর মিয়াপাড়া এলাকায়। আহত এরশাদুল ওই এলাকার মনজু মিয়ার পুত্র। এ ঘটনায় গত ৩ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
কিন্তু বদরগঞ্জ থানা পুলিশ মামলাটি আমলে নেয়নি বলে ভুক্তভোগি পরিবারটি অভিযোগ করেছেন। ঘটনার হোতা অভিযুক্ত রানা বাবু (২৫) ও তার লোকজনের হুমকিতে অসহায় হয়েছে পড়েছে আহত প্রতিবন্ধী কিশোরের বাবা মনজু মিয়া।
মামলা ও বাদীর অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের বৈরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় খেলার মাঠে গত ২২ আগস্ট চুরির অপবাদ দিয়ে অভিযুক্ত রানা বাবু একই এলাকার প্রতিবন্ধী এরশাদুল হককে বেদম মারপিট করে গুরুতর জখম করে। এতে বাম চোখে আঘাত লাগে। কিল ঘুষি দেওয়ার এক পর্যায়ে এরশাদুলকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা চালানো হয় বলে অভিযোগে বলা হয়। পরে ঘটনাটি আশপাশের লোকজন দেখতে পেয়ে ছুটে এসে এরশাদুল হককে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় এরশাদুলের বাবা মনজু মিয়া গত ৩ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে(বদরগঞ্জ) মামলা করেন। পরে মামলাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বদরগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু পুলিশ এ পর্যন্ত আসামীকে ধরতে পারেনি। উল্টো মামলা দেওয়ায় বাদী পক্ষকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন প্রতিবন্ধী কিশোরের বাবা মনজু মিয়া।
মামলার বাদী মনজু মিয়া বলেন, ‘সম্প্রতি বৈরামপুর এলাকা থেকে একটি বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র চুরি হয়। কে বা কারা সেটা চুরি করে। রানা বাবু মিথ্যা অপবাদ দেয় চুরির কথা নাকি আমার প্রতিবন্ধী ছেলে এরশাদুল এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে। এ কারণে তাকে একলা পেয়ে বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত করে। সে পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলের বাম চোখে আঘাত করে। বদরগঞ্জ হাসপাতাল চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাই। এখন রানা বাবু বিভিন্নভাবে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। রানা বাবুর বাবা আব্দুল আজিদ এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে তারা থানা কিনে নিয়েছে। আদালতে মামলা করেও নাকি কিছুই হবে না।’
তদন্তকারী এসআই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর ঘটনাটি সরেজমিন তদন্ত করা হয়েছে। আহত ব্যক্তির মেডিকেল প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অভিযুক্ত রানা বাবু স্বীকার করে বলেন, ‘আমি এরশাদুলকে তিনটা মাত্র চড় দিয়েছি। এর বেশি মার কিংবা ডাং দেই নাই। তাদের হুমকি ধমকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। অথচ তারা আমার মা বাবাকে আসামী করে অভিযোগ করেছে।’