1. [email protected] : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
  2. [email protected] : Sokaler Bani : Iqbal Sumon
  3. [email protected] : Md Hozrot Ali : Md Hozrot Ali
চিকিৎসা অবহেলায় গৃহবধূ, সর্বস্ব খুইয়ে নিঃস্ব স্বামী | দৈনিক সকালের বাণী
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন

চিকিৎসা অবহেলায় গৃহবধূ, সর্বস্ব খুইয়ে নিঃস্ব স্বামী

নিউজ ডেস্ক
  • আপলোডের সময় : সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২৭ জন দেখেছেন

রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায় রেনেসা হসপিটালে সিজারের সময় চিকিৎসা অবহেলার শিকার হয়ে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন এক গৃহবধূ। একটানা দেড়মাস থেকে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ওই গৃহবধূর স্বামী। সোমবার দুপুরে গৃহবধূর চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মাহাফুজা পারভীন চৌধুরী।
ভুক্তভোগী আসিয়া খাতুন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের রুপসি গ্রামের জাকির হোসেনের পুত্র আশিকুর রহমানের স্ত্রী। অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. তানজিলা আক্তার ইলা এমবিবিএস পাশ করে চলতি বছরে (২০২৫) সালে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে সদ্য রেজিস্ট্রেশনভুক্ত চিকিৎসক হয়ে চারমাস থেকে প্রাকটিস করছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোরবেলা রংপুর নগরীর ধাপ এলাকার রেনেসা হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ভর্তি হন মোছাঃ আছিয়া খাতুন। ভোরবেলা তার সিজার করান সদ্য এমবিবিএস পাশ করা ডাঃ তানজিলা আক্তার ইলা। সিজার করেই সেলাইয়ের দায়িত্ব ওয়ার্ডবয়কে দিয়ে তিনি চলে যাওয়ার পর থেকেই সিজারের কাটা জায়গা থেকে অনবরত রক্ত আসা শুরু করে। একইসাথে প্রসাবের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। রোগীর অবস্থা ক্রমাগত অবনতি হলে বেলা ১২ টায় অজ্ঞাত আরেকজন সিনিয়র ডাক্তারকে নিয়ে পুনরায় ওটিতে নিয়ে অপারেশন করান ডাঃ তানজিলা। পরবর্তীতে রোগীর অবস্থা অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করানোর পরেও কাটা জায়গা থেকে অনবরত ব্লাড আসা ও প্রস্রাব বন্ধ হয়ে পেট ফুলে যাওয়ায় পুনরায় অপারেশন করানো হয়।

এদিকে তৃতীয় বার অপারেশনের একদিন পরে ডাইলাইসিস ও লাইফ সাপোর্টের প্রয়োজন হলো উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করানো হয় ২ ডিসেম্বর। অদ্যাবধি দেড় মাস থেকে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ভুক্তভোগী আসিয়া খাতুন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী রোগী আসিয়া খাতুন ক্রন্দনরত অবস্থায় জানান, ওটিতে নিয়ে ওরা এনেস্থিসিয়া দেয়ার পরে ডাক্তার তানজিলা অপারেশন থিয়েটারে ঢুকেই পাঁচ মিনিটের মধ্যে অপারেশন করে বাচ্চাটা বের করেই চলে যায়। তারপরে ওয়ার্ডবয় জিজ্ঞেস করে আপনি কসমেটিক সেলাই দিবেন না নরমাল সেলাই। তারপরে থাকি আমার প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। ব্লাড আসা শুরু করে। দুপুর বেলা ওটিতে নিয়ে আরেক ডাক্তারসহ আমার সিজারের জায়গার সেলাই খুলিয়া আবার সেলাই দেয়। তারপরেও আমি সুস্থ হই নাই।

ভুক্তভোগীর স্বামী আশিকুর রহমান জানান, আমি কিন্ডার গার্ডেনের শিক্ষক। পরিচিত এক মামা বলছিলো ওখানে কম খরছে ভালো চিকিৎসা করায়। এই আশায় ভর্তি করাইছিলাম। এখনতো আমার সব শেষ। ইতিমধ্যে ১৫ লক্ষ টাকা খরছ হয়েছে। এ পর্যন্ত হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে পারি নাই। তারপরেও বউটা বাঁচবে কিনা জানি নাহ। রেনেসা হসপিটালের মালিক ও ডাক্তার ভুল স্বীকার করে বলছিলো চিকিৎসা করাতে ওরা খরছ দিবে। পরে আর খোঁজ নেয়নি। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।

রেনেসা হসপিটালের স্বাত্বাধিকারী মোস্তাফিজার রহমান (মোস্তাক) জানান, সিজারের পরে কিছু সমস্যা হয়েছিল। প্রস্রাব হচ্ছিল না। তাই আমরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কথা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রথমে স্বীকার না করলেও পরবর্তীতে জানান, আমি তাদের চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দিতে চেয়েছিলাম। পরে কি হয়েছে আমি জানিনা।
এবিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাঃ তানজিলা আক্তার ইলা জানান, আমি অপারেশন শেষ করে চলে আসি, পরে শুনতে পাই তার প্রস্রাবের সমস্যা হয়েছে। তাই আমি পুনরায় গিয়ে ক্যাথেটার পরিবর্তন করে দেই। তবে তিনি দ্বিতীয়বার অপারেশন করার কথা অস্বীকার করেন।

রংপুর জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মাহাফুজা পারভীন চৌধুরী জানান, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দুইপক্ষকে নোটিশ করে অফিসে ডাকা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত দৈনিক সকালের বাণী
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )