


দীর্ঘদিনের জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান ও তাঁর পরিবারের উপর হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিপক্ষ পক্ষ চলমান মামলার জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং বাধা দিতে গেলে আতাউর রহমানকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বুড়িরহাট বাজারে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন আতাউর রহমান।
সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, তাঁর সঙ্গে একই এলাকার খলিলুর রহমান ও তাঁর পরিবারের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ২০১৬ সাল থেকে চলমান রয়েছে। আতাউর রহমানের দাবি, তাঁর দাদা আলহাজ কাইল্টা মামুদের মৃত্যুর পর দাদার তিন সহোদর—ছমির, আব্দুল জব্বার ও এজার—ও তাঁদের বংশধররা যৌথভাবে থাকা সম্পত্তি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মাঠ জরিপে নিজেদের নামে অবৈধভাবে নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি রেকর্ড সংশোধনী ও বাটয়ারা মামলা দায়ের করেন, যা এখনো আদালতে বিচারাধীন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষ প্রভাব খাটিয়ে তাঁর পরিবারের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। ২০ অক্টোবর (সোমবার) দুপুরে তাঁরা জমি দখলের উদ্দেশ্যে মাপযোগের আয়োজন করলে প্রতিবাদ জানাতে গেলে আতাউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালানো হয়। এসময় আতাউর রহমানকে মারধর ও হত্যার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের উপস্থিতির কারণে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।
আতাউর রহমান দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তাঁর পরিবার ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। তিনি বলেন, “আমাদের লোকজনকে কাঁদাপানিতে চুবিয়ে মারা চেষ্টা করা হয়েছিল, বাড়িঘর ভাঙচুর ও ফলবান গাছ কর্তন করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা এখনো রংপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন।”
তাঁর অভিযোগ, খলিলুর রহমানের দুই ছেলে—বড় ছেলে জিয়াউর রহমান (আওয়ামী লীগ ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি) ও ছোট ছেলে জহুরুল ইসলাম—দলীয় পরিচয় ও রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। বর্তমানে জহুরুল ইসলাম বিএনপির স্থানীয় ওয়ার্ড সভাপতি হলেও তিনি এর আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি স্ট্রাইকিং ফোর্সে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আতাউর রহমান বলেন, “তারা রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো বিএনপির নাম ব্যবহার করছে। মূল উদ্দেশ্য আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি দখল করা।” এ বিষয়ে অভিযুক্ত খলিলুর রহমান বলেন, আতাউরের দুই চাচা জমি বিক্রি করেছে আব্দুর রউফের কাছে। রেকর্ডমুলে সেই জমি গত সোমবার সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছি। সেকারনে ওই দিন দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানান, উভয় পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলমান রয়েছে, যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমএ ফারুক জানান, জমি নিয়ে বিরোধে ওই দিন খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাটিয়েছি। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দেয়া হয়েছে।