


কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রতারণার অভিযোগে চিহ্নিত মানবপাচারকারী মমিনুল ইসলাম বাবলুকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার দুপুরে শহরের বড়ো মসজিদ মোড়ে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী, আব্দুল মজিদ মন্ডল, মহন্ত বর্মন, দুলাল হোসেন, মোজাফফর রহমান, আব্দুল কাদের সরকার প্রমুখ। এ সময় তারা বলেন, উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের পশ্চিম কালুডাঙ্গা গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মমিনুল ইসলাম বাবলু দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠানোর কথা বলে এলাকার সহজ সরল মানুষদের প্রভাবিত করেন। তাদেরকে ফুসলিয়ে ১২ জনের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। শুধু তাই নয় উপরন্তু আরো অর্থ আদায়ের জন্য ফাঁকা স্ট্যাম্প ও ফাঁকা চেকে স্বাক্ষর নেন।
পরে জাল পাসপোর্ট ও জাল কোরিয়ান ভিসা তৈরি করে ভুক্তভোগীদের ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রেখে পালিয়ে যায় বাবলু। এরপর পর্যটক ভিসায় নেপাল পাঠিয়ে আরো প্রতারণা করেন। এতে করে চরম ক্ষতির মুখে পড়েন ভুক্তভোগীরা। তারা আরো বলেন, টাকা ফেরত না দিয়ে বাবলু তাদের দেওয়া ফাঁকা চেক-স্ট্যাম্পে ইচ্ছামতো অঙ্ক বসিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার আদালতে চেক ডিজঅনার মামলা করেন। এসব মামলায় বহু মানুষ হয়রানির শিকার হন এবং কেউ কেউ জেলও খাটেন। তার সহযোগী হিসেবে আবু বক্কর সিদ্দিক, মিঠু ও মঞ্জুসহ কয়েকজন একই প্রতারণায় জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বাবলুর প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা অর্ধশত বলে দাবি তাদের।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত ১৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে বাবলুর বিরুদ্ধে উলিপুর আমলি আদালতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। এরপর ২১ এপ্রিল বিষয়টি তদন্ত করার জন্য থানায় পাঠানো হয়। সাত মাস পেরিয়ে গেলেও উলিপুর থানা এখনো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এতে তারা হতাশ হয়েছেন। এ বিষয়ে মমিনুল ইসলাম বাবলুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে ফোন কেটে দেন। উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, তাদের অভিযোগ সঠিক নয়। ইতোমধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা স্মারকলিপি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, পরবর্তী কার্য দিবসে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।