
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের ঘটনা তদন্তে অনুপস্থিত ছিলেন উত্ত্যক্তকারী মো. আল আমিন মিয়া। তিনি উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর কুরুয়াবাদা ইসলামিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী। উত্ত্যক্তের স্বীকার তারই মাদ্রাসার এক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
শুক্রবার বিকেল ৩ টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তদন্ত কমিটির প্রধান সদস্য ও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, তদন্তের পূর্বনির্ধারিত তারিখ ছিলো গত বৃহস্পতিবার বিকেলে। আমরা তদন্ত কমিটির সদস্যগণ নির্ধারিত দিনে ও যথাসময়ে ওই মাদ্রাসায় যাই। তবে তদন্তে উপস্থিত ছিলেন না অভিযুক্ত মো. আল আমিন মিয়া। পরে অভিযোগকারী শিক্ষার্থী ও তাঁর স্বজনদের সাথে কথা বলি আমরা। ওই শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করা হয়েছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তদন্তে। এ-র আগেও তদন্তের নির্ধারিত দিন ধার্য ছিলো। সেদিনও আসেননি অভিযুক্ত মো. আল আমিন মিয়া। তবে ওইদিন সময় চেয়ে নিয়েছেন তিনি। সব তথ্য নিয়ে এসেছি। আগামী সপ্তাহে রিপোর্ট দিবো ইন্শ আল্লাহ।’
এ বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত মো. আল আমিন মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ ছিলাম। সে কারণে রংপুর গিয়েছিলাম ডাক্তার দেখাতে। সে কারণে তদন্তে উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে তদন্ত কর্মকর্তার সাথে আমার কথা হয়েছে মোবাইল ফোনে।’ এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার ও অভিযুক্ত মো আল আমিন মিয়ার আপন বড়ভাই মো. আনোয়ার হোসাইন এর মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে তিনি ফোন না ধরে কেটে দেন।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৫৩ মিনিটে মো. আল আমিন মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে ওই শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বরে ‘ও জান কথা বলো না কেনো গো?’ লেখা একটি খুদে বার্তা আসে। একইভাবে দীর্ঘদিন ধরে আল আমিন বিভিন্ন সময় ওই শিক্ষার্থীর মুঠোফোনে খুদেবার্তা ও কল দিয়ে উত্ত্যক্ত করছেন। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনও করেছেন অফিস সহকারী আল আমিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা কথা ছড়িয়ে পড়ায় মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন ওই শিক্ষার্থী। বাধ্য হয়ে এ মাসের গত ৮ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। পরে “উত্ত্যক্তের শিকার ছাত্রীর মাদ্রাসা যাওয়া বন্ধ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ২০ সেপ্টেম্বর সংবাদটি প্রকাশ হলে নড়ে-চড়ে বসেন উপজেলা প্রশাসন ও তদন্ত কমিটি সদস্যগণ। ওই শিক্ষার্থী এখনো অনুপস্থিত আছেন মাদ্রাসায়। লেখাপড়া নিয়ে শঙ্কিত পরিবার ও তাঁর স্বজনরা।
Related