হঠাৎ করেই উত্তাল দেশের নাট্যাঙ্গন। ছোট পর্দার অভিনেতা শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে মারধর এমনকি ধর্ষণের হুমকির মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন নবাগত অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা প্রিয়া।
এই ঘটনার পরই শামীমের বিরুদ্ধে শুটিংসেটে অসাধারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুই বছর আগের এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী, বাচিক শিল্পী ও সঞ্চালক সিফাত বন্যা।
যেখানে তিনি শামীম হাসান সরকারকে ‘ভাঁড়’ বলে সম্বোধন করেছেন। একইসঙ্গে অভিনেত্রী দাবি করেছেন, শামীমের ব্যবহারের কারণে তাকে জুতাপেটা করতে চেয়েছিলেন তিনি।
সিফাত তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘শামীম হাসান সরকার নামে একজন ভাঁড় আছে। সে গতকাল একজন অভিনেত্রীকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে। সেই সেটের ডিরেক্টর থেকে শুরু করে সবাই নাকি চুপ ছিল! চিন্তা করেন এদের অবস্থা! এদের মানসিকতা!’
অভিনেত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়ার ঘটনার স্মৃতি টেনে তিনি লিখেছেন, ‘গত দুই বছর আগে রাজধানীর উত্তরায় একটি শুটিং হাউজে বুদ্ধিজীবী দিবসের দিন ওর (শামীম) সাথে আমার কাজের পড়ে। আমি এডিকে (এসেস্টেন্ট ডিরেক্টর) বলি আমাকে ২ টার মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে। কারণ চারটার সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে আমাকে আবৃত্তি করতে হবে।’
পরের ঘটনা উল্লেখ করে সিফাত লেখেন, ‘সেদিন আমার খুব জ্বরও ছিল। মেকআপ রুমে যাওয়ার পর ওর সাথে (শামীম) এডি আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়। ভাঁড়ের সাথে ওই দিনই আমার প্রথম কাজ ছিল। পরিচয়ের পরে হাই হ্যালো হলো এবং এডি ওকে বলেওছিল আমার খুব জ্বর। তাই এসি টা কমিয়ে দিলাম। মেকআপ রুমে আমি,ভাঁড়, আর মেকআপ আর্টিস্ট। আমি বসে বসে স্ক্রিপ্ট পড়ছি। আর ভাঁড় জোরে জোরে ইংরেজি গান,হিন্দি গান বাজাচ্ছে। একটু পর এসিটাও বাড়িয়ে দেয়।’
‘এডি যে ওকে বলে গেল আমার জ্বর তাতে ওর কোনো মাথাব্যথা নেয়। আমার মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। তবুও সিনিয়র যেহেতু আস্তে করে উঠে গিয়ে বললাম ভাইয়া আমার তো খুব জ্বর এসি টা কমালে খুব ভালো হতো। তাছাড়া গানের সাউন্ড নিতে পারছি না আর আজ বুদ্ধিজীবী দিবস চলুন বাংলা গান শুনি। এ কথা বলতেই ও মেকআপ আর্টিস্টের সামনেই আমাকে বলে আপনার জ্বর আমি কি করবো! আপনি বাইরে যান। আর আপনি আমাকে ইন্টেলেকচুয়ালিটি শেখাচ্ছেন! মানে একদম চেঁচিয়ে। মনে হচ্ছিল সে পারলে গায়ে হাত তুলবে।’
সিফাত বলেন, ‘একজন নারী সহকর্মীর সাথে তার এমন আচরণ আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। স্বাভাবিক বিষয় শুরুতে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। কিন্তু পরে বলেছি মেকআপ রুম আপনার একার নয়। মেকআপ রুম আমাদের সবার। এক কথায় দুই কথায় দুজনেই কথা কাটাকাটি করি। ডিরেক্টর এবং এডি এসে দুইজনকে দুই রুমে নিয়ে যায়। পরে ওকে ঠান্ডা করে, আমাকেও। এরপর ও আমার সাথে কাজ করবে বলে কিন্তু আমি বলেছিলাম এক কোটি টাকা দিলেও আমি ওর সাথে কাজ করবো না। সেট ছেড়ে চলে এসেছিলাম।’
এই ঘটনায় অপমানিত বোধ করছিলেন সিফাত। তার কথায়, ‘আমি তো ডিরেক্টর আর এডির জন্য ওখানে আর কথা বলতে পারলাম না। সেও পারেনি। সবকিছু মিলে সেটে অনেক কিছু ঘটলেও আমাদের আগে কাজের কথা চিন্তা করতে হয় কারণ টাকার কাজ। অনেক ইনভেস্টমেন্টের কাজ। সবকিছু মিলিয়ে অনেক কিছু সহ্য করে চুপ থাকতে হয়। আমি চলে আসি। তারপর জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করি। আমি একজন শিল্পী। আমাকে মেকআপ আর্টিস্টের সামনে রুম থেকে বের হয়ে যান বলাটা মাথা থেকে সরাতেই পারছিলাম না। চূড়ান্ত অপমানই করেছিল একজন নারী সহকর্মী হিসেবে।’