দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন সহকারী শিক্ষকদের ব্ল্যাকবোর্ডে উত্তর লিখে দেওয়ার অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পর সংবাদকর্মীর উপর হামলা ও ফোন ভাংচুর করেছেন, অভিযুক্ত শিক্ষকরা। অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে খানসামা উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি সুজন শেখের উপর হামলা চালান কয়েকজন শিক্ষক। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অভিযুক্ত শিক্ষকরা সুজন শেখকে ঘিরে ফেলে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভাংচুর করেন।
সুজন শেখ বলেন, “আমি সত্য তুলে ধরেছি বলেই আজ হামলার শিকার হয়েছি। শিক্ষক নামধারী কিছু ব্যক্তি আমাকে হুমকি দিয়ে চুপ করাতে চেয়েছেন।” এ ঘটনায় তিনি খানসামা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন । স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন নাগরিক সমাজ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত হামলাকারী শিক্ষকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এরই মধ্যে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির তালুকদার জানিয়েছেন, অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ৮টি বিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, “শিক্ষাক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে নিয়মিত মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে।” উল্লেখ্য, সোমবার (১২ মে) প্রথম মূল্যায়ন পরীক্ষায় উত্তর ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উত্তর টংগুয়া, মাদার পীর, মধ্য জাহাঙ্গীরপুর, তেবাড়িয়া, সুবর্ণখুলি, ওকরাবাড়ি, উত্তর ভেড়ভেড়ী এবং ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেই প্রতিবেদন প্রকাশের পরেই হামলা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা দুই-ই ঘটে।
শিক্ষায় অনিয়ম আর সাংবাদিক দমনচেষ্টা—দুই মিলিয়ে খানসামা উপজেলায় শিক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে জনমনে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে।