রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হযরত আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগ উঠেছে। বিএনপি নেতার নির্দেশে হামলার শিকার ভুক্তভোগী মনিরুজ্জামান সরকার বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামে বছরখানেক আগে নিজস্ব পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করে রেখেছিলেন মনিরুজ্জামান। মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) সেই বালু বিক্রি শুরু করলে মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হযরত আলী ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান মনিরুজ্জামান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি নেতা হযরত আলী তার বোনজামাই মামুনুর রশিদের সঙ্গে পূর্বের জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বকে পুঁজি করে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে কয়েকজন মিলে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মনিরুজ্জামানের বালু পরিবহনের ট্রাক্টর আটকে দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মনিরুজ্জামান সরকারের পরিবারের লোকজন গেলে বিএনপি নেতা ও তার লোকজনের হামলায় কয়েকজন আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
হামলায় আহত মালেকুজ্জামান বলেন, মারামারির পর হযরত আলী মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যথায় এক বছর আগে উত্তোলনকৃত বালুর জন্য দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হুমকি দিচ্ছেন। এক বছর থেকে উপজেলা প্রশাসন কোন মামলা দিলো নাহ। এখন আমাদের নাকি ইউএনও এসিল্যান্ড মামলা দিবে। আমরা এর ন্যায্য বিচার চাই।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী মনিরুজ্জামান সরকার বলেন, জমিজমা নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা হযরত আলীর বোন জামাই মামুনুর রশিদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলমান। আজকে এটা নিয়ে থানায় বসার কথা ছিলো। এর মধ্যে বিএনপি নেতা হযরত আলীর দাবিকৃত চাঁদা না দেয়ায় আমাদের ট্রাক্টর আটকিয়ে দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে উল্টো নিজেদের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে আমাদের উপর মিথ্যা মামলার পায়তারা করতেছে। এখন শুনতেছি হযরত আলী বিএনপি নেতা হওয়ায় আমাদের মামলা হতে দিবে না। আমি সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী বলেন, আমার বোনের সঙ্গে বিরোধকৃত জমি দখল করে ওরা বালু পরিবহন করছিলো। আমি এবিষয়ে কথা বলার জন্য ৪-৫ জন মিলে গেলে ওদের লোকজন আমাদের হামলা করেন। একপর্যায়ে হাতাহাতি হওয়ার পর ওরা আমার বোনের বাড়ি ভাংচুর করে। আমি কোন চাঁদা দাবি করিনি। বালু বিক্রি করাইতো অপরাধ। তার উপর ওরা আমার উপর হামলা করে অপবাদ দিতেছে।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন, জমিজমার দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়েছে। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ছিলাম। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Related