পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের জায়গীরজোত কদমতলা সীমান্তে মহানন্দা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত ব্যক্তির অবশেষে পরিচয় মিলেছে। নিহত ব্যাক্তির নাম জুয়েল ইসলাম (৩৮)। তিনি পেশায় একজন পাথর শ্রমিক। কখনো দিনমজুরের কাজও করতেন তিনি। তার বাড়ি জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের বংশীধর পূজারি গ্রামে। তিনি ওই এলাকার কামাল উদ্দীনের ছেলে। তার দ্ইু ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ওসমান গনি গত বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে তেতুঁলিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত হত্যাকারী সনাক্ত না হওয়ায় কাউকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে নিহতের পরিচয় সনাক্ত করে আইনী প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ।
তেতুঁলিয়া মডেল থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত জুয়েল প্রায় ৫ বছর ধরে বাংলাবান্ধা এলাকায় পাথর শ্রমিকের কাজ করে আসছিলেন। এ কারণে ভাড়া বাসাতে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন। তবে গত সোমবার (৭ অক্টোবর) থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের সদস্যরাও তার অনেক খোঁজ করেও পাননি। পরদিন মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের জায়গীর জোত এলাকায় মহানন্দা নদীর চরে রক্ত দেখতে পান নদীতে কাজ করতে যাওয়া কয়েকজন পাথর শ্রমিক। পরে কিছু দূরে কাঁচা বালি দেখতে পেয়ে বালি খুঁড়তেই একটি হাত বেরিয়ে আসে। পরে সেখান থেকে এক ব্যাক্তি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ঘটনাস্থল গিয়ে নিহতের উভয় হাতের আঙ্গুলের ছাপ সহ প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করে ঠাকুরগাঁও সিআইডির একটি বিশেষজ্ঞ দল। পরে আলামত পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়। পরে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। নিহতের পরনে শার্ট ও লুঙ্গি ছিল। এছাড়া মাথায়, চোয়ালে, কানে সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটা ও আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। নিহত ব্যাক্তিকে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হতে পারে বলে সেময় ধারণা করেন পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তেতুঁলিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনসারুজ্জামান বলেন, গত মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) মরদেহ উদ্ধারের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যেম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। মরদেহের ছবি সংগ্রহ করেন তারা। পরে মরদেহের পরিচয় সনাক্ত করে নিহতের ভোটার আইডি কার্ড, ছবি সহ বিভিন্ন প্রমানাদি নিয়ে থানায় হাজির হন পরিবারের সদস্যরা। পরে বুধবার (৯ অক্টোবর) মরদেহ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে আইনী প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করা হয়। আমরা এঘটনায় আসামী সনাক্তে কাজ করছি।
তেতুঁলিয়া মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার রায় বলেন, নিহত ব্যাক্তিকে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। আসামী ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।