বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেকেই এখন বলছে, বিএনপি সংস্কার চায় না, নির্বাচন চায়। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবার বলছি, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যেটুকু (সংস্কার) দরকার তার শেষে নির্বাচনে যেতে চাই। আমরা নির্বাচনের কথা বলছি কেন? ড. আলী রীয়াজ বলছেন, সবাই বলছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার নির্বাচন হচ্ছে প্রধান ফটক, প্রধান দরজা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিন নির্বাচনের প্রসঙ্গে টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর মধ্যে একটা নির্বাচন কিন্তু আরেকটা নির্বাচন থেকে ভালো হয়েছে। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানুষ গ্রহণ করেছে। মানুষ এটাকে অত্যন্ত জরুরি মনে করেছে। আমরা যদি তখন রাষ্ট্রপতি শাসনে চলে যেতাম, তখন সেটা মানুষ কিন্তু গ্রহণ করত না।
বিএনপি ২০১৬ সালে ডকুমেন্টারি বের করেছে, যেখানে রাজনৈতিক সংস্কারের কথা বলা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা, প্রধানমন্ত্রী যেন দুই বারের বেশি না হতে পারেন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের কথা বলেছিলাম আমরা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরে ২০২২ সালে প্রথমে ১২ দফা, এরপর সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে ৩১ দফা দিয়েছি। দীর্ঘ দুই বছর আলোচনা করেছি। অনেকের সঙ্গেই তখন কথা বলে ৩১ দফা করেছি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে সবাই যেন মনে রাখেন সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যেন ’৭১ ভুলে না যাই। তারপর ধারাবাহিক গণতন্ত্রের যে লড়াই সেটা আমাদের প্রত্যেকেরই মনে রাখার দরকার। আমরা এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি, বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের পক্ষে। একইসঙ্গে এও মনে রাখা দরকার, জনগণকে বাদ দিয়ে চাপিয়ে দিয়ে কোনো কিছু সম্ভব না।
এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণফোরামের নেতা সুব্রত চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ।