নীলফামারীর সৈয়দপুরে বৃহস্পতিবার (২৬সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে দুপুর বারটা পর্যন্ত ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত কয়েকদিনের প্রচন্ড তাপদাহের অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল জনজীবন। আর গতকালকের আশাতীত বৃষ্টিতে জনমনে ফিরে এসেছে স্বস্তি ।
চলতি সপ্তাহে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে। এখানে গত কয়েক দিনে ৩৭ ডিগ্রী থেকে ৩৯ ডিগ্রী পর্যন্ত তাপামাত্রা উঠানামা করে। প্রচন্ড তাপদাহে ও তীব্র অসহ্য গরমে জনজীবন হয়ে পড়েছিল ওষ্ঠাগত। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অব্যাহত ছিল বিদ্যূৎ বিভাগের সীমাহীন লোডশেডিং। তীব্র গরম আর প্রচন্ড খরতাপে কোন জায়গায় বিন্দুমাত্র স্বস্তি মিলছিল না মানুষের। তাই একেবারে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হননি গত কয়েকদিনে। আর বিদ্যূতের লোডশেডিংয়ে তথা লুকোচুরিতে ঘরেও মিলেনি মানুষের স্বস্তি। দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি অভাবে মাঠে মাঠে লাগানো উঠতি আমন ধান খেতগুলোও পানির ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছিল। ফলে আমন ধান খেত বাঁচাতে অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালোমেশিন, গভীর নলকূপ ও বিদ্যূৎচালিত সেচ যন্ত্রের সাহায্যে সেচের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সৈয়দপুরসহ আশেপাশের এলাকায় থেমে থেমে ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরে থাকা আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা লোকমান হাকিম এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন। এতে করে কৃষকদের আর বাড়তি টাকা পয়সা খরচ করে আমন ধান খেতে সেচ দিতে হয়নি। প্রাকৃতিক বৃষ্টি পেয়ে আমন খেতগুলোকে আরো বেশি সজীব লাগছে। যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন কৃষকদের আমন ধান খেতগুলো।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, কাঙিখত বৃষ্টিপাত হওয়ার কৃষকেরা আমন খেতে নিড়ানি ও উপরি হিসেবে সার প্রয়োগ করছেন। এখানে কথা হয় খাতামধুপুর ইউনিয়নের কৃষক খালিশা ব্রহ্মত্তর গ্রামের কৃষক মো. মুনিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, আমার ধান ক্ষেতে ধোর আসার সময় হয়েছে। তাই আজ আমন ধান খেতে সেচ দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ার আর সেচ দিতে হচ্ছে না।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ধীমান ভূষন জানান, গত কয়েক দিনের প্রবল তাপদাহে আমন ক্ষেত নিয়ে কৃষকরা ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু গতকালকের বৃষ্টি আমন ধান ক্ষেতের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। আশা করি, এ বৃষ্টিপাতের পর আর আমন চাষে কোন বিরূপ প্রভাব পড়বে না।