নীলফামারীর সৈয়দপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতভাগ পদোন্নতি, প্রধান শিক্ষকদের নবম ও সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেল সোয়া চারটায় বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন সমন্বয় পরিষদ সৈয়দপুর শাখার আয়োজনে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকেরা অংশ নেন।
মানববন্ধন চলাকালে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সৈয়দপুর ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান, তুলশীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান খান, শ্বাষকান্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বাদল, লক্ষণপুর চড়কপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আমিনুর রহমান বিপু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষককে যে গ্রেডে বেতন-ভাতা দেয়া হয় তা মর্যাদার প্রশ্ন। তাছাড়া বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে প্রদত্ত গ্রেডের বেতন দিয়ে জীবন নির্বাহ করা খুবই কঠিন। তাই বক্তারা তাদের বক্তব্যে জীবনমান উন্নত এবং মর্যাদাসম্পন্ন করতে প্রধান শিক্ষকদের ৯ম ও সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের যুক্তি তুলে ধরেন। নবম ও দশম গ্রেড শুধু আমাদেও প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের দাবিই নয়, এটি আমাদের ন্যায্য ও যৌক্তিক অধিকার।
পরে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। ইউএনও’র পক্ষে স্মারকলিপিটি গ্রহন করেন অফিসারের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা একেএম আমিরুজ্জামান শামীম। স্মারকলিপিতে বলা হয়, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। আর শিক্ষার মুল ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগারের কান্ডারি। দেশ আজ উন্নয়নশীলের কাতারে, মাথাপিছু আয় ২৭৯৩ মার্কিন ডলার। নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়। বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বতীকালীন সরকার সাম্য গড়ার প্রত্যয়ে উন্নত,সুখী ও সমৃদ্ধ সমতার বাংলদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন।
বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বতীকালীন সরকারের বৈষম্যহীন সমতার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সারথী হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষকরা সমতার স্মার্ট নাগরিক গড়ার প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে বদ্ধ পরিকর। স্মারকলিপিতে শিক্ষক নবম ও দশম গ্রেড প্রাপ্তির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এতে বলা হয়েছে, একজন নার্স এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমার পর নিয়োগ পেয়ে (এইচএসসি সমমান) বেতন পায় দশম গ্রেডে। শুধু তাই নয়, একজন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, পুলিশের উপপরিদর্শকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও স্নাতক সমমান যোগ্যতায় নিয়োগ পেয়ে বেতন পায় নবম-দশম গ্রেডে।
তাহলে সমযোগ্যতা হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষকদেও ক্ষেত্রে এমন বৈষম্য কেন ? স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, স্নাতক সম্পন্ন করে একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বেতন পান ১৩তম গ্রেডে। অথচ অষ্টম শ্রেণি পাস করা একজন সরকারি গাড়িচালক বেতন পান ১২তম গ্রেডে।
তাই স্মারকলিপিতে উল্লিখিত যুক্তি ও কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার আহবার জানানো হয়েছে।