দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, যেন দম ফেলার সময় নেই কারিগরদের। সুনিপুণ হাতে মাটি ও রংতুলির ছোঁয়ায় দেবীকে রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত শিল্পীরা। কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা হচ্ছে দেবীদুর্গার প্রতিমা। কারিগররা প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেউ কাঁদা তৈরি করছেন, কেউ কাঁদা থেকে হাত-পা বানাচ্ছেন। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরাও বাবার কাজে সহযোগিতা করছে। বছরের এ সময়টায় কাজের চাপ বেশি থাকায় বসে নেই গৃহিণীরাও। মাটি দিয়ে সুনিপুণ হাতে তৈরি করছেন কারুকাজময় অলঙ্কার। আর সেই অলঙ্কার প্রতিমার শরীরে জড়িয়ে দিয়ে সাজিয়ে তুলছেন অনন্যা রূপে।
জানা গেছে, এবার উপজেলায় বাসন্তী পূজাসহ ১৫১ টি মন্ডপে পূজা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে কমতে পারে এর সংখ্যা। তবে দ্রব্য মূল্যের সাথে তাল মিলিয়ে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে রং, তুলি ও সাজসজ্জার দাম বেশি হওয়ায় এবং প্রতিমা তৈরির মজুরি কম পাওয়ায় কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে শিল্পীদের।
মৃৎশিল্পী চন্দন বলেন, আমরা তিন জন মিলে কাজ করি। আমি ৫ বছরের বেশি সময় যাবত প্রতিমা তৈরি করে আসছি। দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও সকল ধরনের প্রতিমা আমরা তৈরি করি। এবার ৩টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। এবার পূজা কম হবে তাই অর্ডার কম। ২৫ হাজার টাকায় প্রতিমা বানাচ্ছি। প্রকারভেদে আরো কম দামে বানাচ্ছি।
আরেক প্রতিমা কারিগর বাবু চন্দ্র রায় বলেন, আমি প্রতিবারে ৩ থেকে ৫টা প্রতিমা তৈরি করে থাকি। এবার দেশের পরিস্থিতির কারনে কমে গেছে, এবার ২টার কাজ করছি। ৭৫ হাজার টাকার প্রতিমা করতে হচ্ছে ২০ হাজার টাকায়।
খানসামা উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অনন্ত কুমার রায় বলেন, পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে দুর্গোৎসব পালনে মন্ডপে মন্ডপে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। উপজেলায় বাসন্তী পূজাসহ ১৫১ টি মন্ডপে পূজা হওয়ার কথা রয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষে জানা যাবে কয়টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।