বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তাহির হত্যা মামলায় রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে মেট্রোপলিটন চিফ আদালত রংপুরের বিচারক আসাদুজ্জামান তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তুষার কান্তি মন্ডলকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুন্নবী আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামিপক্ষে লিগ্যাল এইডের আইনজীবী ইফফাত আক্তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তাহির হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ছাড়াও তুষার কান্তি মন্ডলকে অন্য আরও তিনটি হত্যা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।
নিহত আব্দুল্লাহ আল তাহির রংপুর মহানগরীর জুম্মাপাড়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি ঢাকার বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকসের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন। গত ১৯ জুলাই বিকেলে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর সিটি বাজারের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন আব্দুল্লাহ আল তাহির।
তাহিরের মৃত্যুর ঘটনায় তার মা-বাবা পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলী আদালতে মামলা করেন তাহিরের মা শিরিন বেগম। এর আগে গত ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানা আমলী আদালতে তাহিরের বাবা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা করে। ওই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাসান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ ৪০ জনকে আসামি করা হয়।
এদিকে গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সাভার থেকে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা তুষার কান্তি মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চারটি হত্যা মামলাসহ মোট ১১টি মামলা রয়েছে।
এদিকে তুষার কাণ্ডি মন্ডলের বিরুদ্ধে সমবায় ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ ও সমবায় ভবন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাটসহ আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, তুষার কান্তি মন্ডল রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার পক্ষে কাজ না করায় তার নেতৃত্বাধীন কমিটি ভেঙে দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।