
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) শিক্ষার্থীদের অবসর, আড্ডা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি ভবনটিতে আধুনিক এয়ার কন্ডিশনার (এসি) স্থাপন করা হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত বসার জায়গার অভাবে শিক্ষার্থীরা সেই সুবিধা পুরোপুরি উপভোগ করতে পারছেন না। এছাড়াও ৫ তলা টিএসসিতে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য বরাদ্দ শুধুমাত্র নিচ তলা
প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী টিএসসিতে বিভিন্ন আনুষঙ্গিক কাজে সময় কাটাতে আসেন। কিন্তু সেখানে বসার জায়গার তীব্র সংকট রয়েছে। অনেকে দাঁড়িয়ে, দেয়ালে হেলান দিয়ে কিংবা জায়গা না পেয়ে চলে যেতে বাধ্য হন। শিক্ষার্থীদের অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, এসির ব্যবস্থা করা হলেও প্রয়োজনীয় আসন না থাকায় এই উন্নয়নের সুবিধা ভোগ করা যাচ্ছে না।
শিক্ষার্থী আবরার বলেন, এসি বসানো ভালো উদ্যোগ, কিন্তু বসার জায়গা না থাকলে এই আরাম উপভোগের সুযোগই থাকে না। শিক্ষার্থী কাইয়ুম বলেন, টিএসসিতে ঢুকলে দেখি নতুন এসি চলছে, কিন্তু বসার জায়গা নেই। আমরা আশা করেছিলাম প্রথমে চেয়ার বাড়ানো হবে। কিন্তু আসন না থাকায় হতাশা নিয়ে হলে ফিরতে হয়।
আরেক শিক্ষার্থী হিমেল আহমেদ বলেন, টিএসসি আমাদের পড়াশোনা ও আড্ডার জায়গা। বন্ধুদের সঙ্গে একটু বসে কথা বলার মতো জায়গা নেই। অথচ এসি বসানো হয়েছে, যা এখন প্রয়োজনের তুলনায় বিলাসিতা মনে হয়।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে অনেককেই। একজন শিক্ষার্থী লিখেছেন—“চেয়ার কম, বসার জায়গা নাই, কিন্তু ঘর ঠান্ডা! এই উন্নয়ন কি আসলেই আমাদের দরকার ছিল?”
এছাড়াও এসি লাগানোর পর বর্তমানে শুক্রবার করে টিএসসি বন্ধ থাকছে যেটিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেক শিক্ষার্থীই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. এস. এম. এমদাদুল হাসান বলেন, টিএসসিতে এসি লাগানো অপরিকল্পিত নয়। ছয় মাস আগেই লাগানোর কথা ছিল, আমরা ফিজিবিলিটি এনালাইসিস করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে এসি স্থাপন করেছি। আগের চেয়ারগুলো কোথায় গেল, কী হয়েছে—এসব বিশ্লেষণের পরই চেয়ারের ব্যবস্থা করা হবে শীঘ্রই।
তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, সংস্কার পরিকল্পনায় তাদের মতামত নেওয়া হয়নি। এছাড়াও এসি লাগানোর পর টিএসসি খোলা রাখার সময়সীমা বেধে দিয়েছে প্রশাসন। টিএসসি পরিণত হয়েছে লাইব্রেরিতে। চেয়ার ধরে রাখা ছাড়া জায়গা পাওয়া যায় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরাও আসন সংকটকে গুরুতর সমস্যা হিসেবে দেখছেন। শীতকাল ঘনিয়ে এলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু জায়গা সংকটের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান তারা।
Related