বাংলাদেশ

 রংপুর শিশু হাসপাতালে বহির্বিভাগের কার্যক্রম শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক   রংপুর

০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪


| ছবি: 

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে চালু হয়েছে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট রংপুর শিশু হাসপাতাল। তবে পূর্ণাঙ্গ নয়, আপাতত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সঙ্গে যুক্ত করে এই হাসপাতালের বহির্বিভাগ চালু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবার উদ্বোধন করেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, শিশু হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. মিনহাজ, মেডিকেল অফিসার ডা. ইসরাত জাহান, ডা. বাধন, ডেপুটি সিভিল সার্জন, রুহুল আমীন, সিনিয়র স্টাফ নার্স সাবিনা ইয়াসমিন ও লাবণী আক্তার।
কার্যক্রম শুরুর দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৬ শিশুকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। তারা হলো, ২৩ মাসের জাইফা, ২২ দিনের রুকাইয়া, সানিয়া তাসনিম (১৩), মোস্তাকিম (১৭), আল-সামি (৬) ও বর্ণ (৬)। সরকারি ছুটি ব্যতীত শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগের কার্যক্রম প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নবনির্মিত ১০০ শয্যার শিশু হাসপাতালের কার্যক্রমের চালুর বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজকে বহির্বিভাগের কার্যক্রম শুরুর মধ্য দিয়ে রংপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের চাওয়া কিছুটা হলেও পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। এই শিশু হাসপাতালটি একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হিসেবে চালু করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি।
এদিকে রংপুরের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, রংপুরের সাবেক সদর হাসপাতালের ১ দশমিক ৭৮ একর জমির মধ্যে শিশু হাসপাতাল নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর। ৩১ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার ৮০৯ টাকা মূল্যের সেই কাজটি করেছেন ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স অণিক ট্রেডিং করপোরেশন। ভবন নির্মাণের জন্য দুই বছরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়ের আড়াই মাস আগে কাজ শেষ করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 
তিনতলা মূল হাসপাতাল ভবনের প্রতি তলার আয়তন ২০ হাজার ৮৮২ দশমিক ৯৭ বর্গফুট। এ ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে চারতলা ভিত্তির তিনতলা সুপারিনটেনডেন্ট কোয়ার্টার। সিঁড়ি বাদে প্রতি তলার আয়তন দেড় হাজার বর্গফুট। ছয়তলা ডক্টরস কোয়ার্টারের নিচতলায় গাড়ি পার্কিং, দ্বিতীয় তলা থেকে ডাবল ইউনিট। আছে ছয়তলার স্টাফ অ্যান্ড নার্স কোয়ার্টার। বিদ্যুৎ সাবস্টেশন স্থাপনের জন্যও নির্মাণ করা হয়েছে একটি ভবন। ২০২০ সালের ৮ মার্চ হাসপাতাল ভবন হস্তান্তর করা হয়। কোভিডের প্রাদুর্ভাব বাড়ায় ভবনটিকে ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
বর্তমানে নতুন এই হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগ চালুর উদ্যোগকে অনেকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে শিশু বিশেষজ্ঞদের দাবি, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি মাত্র শিশু বিভাগ দিয়ে এ অঞ্চলের চিকিৎসা প্রত্যাশী সব শিশুকে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হলে শিশুদের জটিল সার্জারি ও সাধারণ সব ধরনের রোগের চিকিৎসা স্বল্প খরচে দেওয়া যাবে। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা পাশের দেশে যাওয়ার প্রবণতাও কমে আসবে।
রংপুরবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শিশু হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন, তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। হাসপাতালটি চালু করতে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বরাবরে চিঠি দেন তৎকালীন সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর কবির। তবে হাসপাতালটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জমাদি ও জনবল সরবরাহ করা হয়নি। বৃহস্পতিবার শুধুমাত্র বর্হিবিভাগের কার্যক্রম শুরু করেছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

20