বাংলাদেশ

মুরগির ঘর নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ পাটগ্রাম প্রাণিসম্পদের বিরুদ্ধে

মিঠু মুরাদ,পাটগ্রাম   লালমনিরহাট

২২ মে ২০২৪


| ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে দরিদ্রদের মাঝে বিতরণের মুরগির ঘর নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদের বিরুদ্ধে। নিম্নমানের টিন, কাঠ দিয়ে এসব ঘর নির্মাণ করে সরকারি বরাদ্দের টাকা হরিলুট করা হয়েছে। এতে এ কার্যালয়ের কর্মকর্তার যোগসাজস রয়েছে দাবি করেন একই কার্যালয়ের একাধিক খন্ডকালীন লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর (এলএফএফ)।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালে বিলুপ্ত ছিটমহল ও নদী বিধৌত চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির আর্থসামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নে উদ্যোগ নেয়।

এতে সরকারের অগ্রাধিকার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাছাইকৃত অতি দরিদ্র ও দুস্থ প্রত্যেক পরিবারকে বিনামূল্যে হাঁস-মুরগির নির্মিত ছোট ঘর ও পালনের জন্য উপযুক্ত হাঁস-মুরগি, গবাদি পশু এবং অন্যান্য সামগ্রীর সমন্বয়ে একটি করে প্যাকেজ বিতরণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু করা হয়।

এ প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে পাটগ্রাম উপজেলায় ৮৮ টি পরিবারের মধ্যে প্যাকেজ বিতরণের বরাদ্দ চলমান রয়েছে। এসব প্যাকেজ বিতরণের পূর্বেই হাঁস-মুরগির ঘর নির্মাণে করা হয়েছে দুর্নীতি। একটি ঘর নির্মাণে সরকার কর্তৃক বরাদ্দ রয়েছে ৭ হাজার ৫ শ ৫৯ টাকা। অভিযোগ উঠেছে নিম্নমানের কাঠ ও টিন দিয়ে ঘর বানিয়ে বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা মেরে দেওয়া হয়েছে। 

এ উপজেলায় হাঁস-মুরগির ঘর সরবরাহকারী কোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বা কে এসব ঘর নির্মাণ করছে তার সঠিক তথ্য জানাতে পারেন নি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কেউ। কার্যাদেশ/ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিটি ঘরে যে ধরণের টিন ও কাঠ ব্যবহার করে ঘর গুলো তৈরি করার নিয়ম সে নিয়ম মানা হয়নি।

পাটগ্রাম উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের একাধিক খন্ডকালীন লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর (এলএফএফ) নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, একদম নিম্নমানের ঘর বানিয়ে আনা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা ব্যয় হবে। বাকি টাকা মেরে দেওয়া হয়েছে। অবশ্যই অফিসের কর্মকর্তা এতে জড়িত না হলে এ ধরনের কাজ করার কেউ সাহস পেতনা।’

খিলগাঁও ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম.এ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রতিনিধি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ঘর ঠিকভাবে বানানো হয়েছে। নিয়ে আসা ঘর গুলো ফেরত নিয়ে যাচ্ছি। এখানকার স্থানীয় পোলাপান ও সাংবাদিক আমাদেরকে নাস্তানাবুদ করছে। আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চায়। এজন্য মাল (ঘর) নিয়ে চলে যাচ্ছি। 

উপজেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. মোতাহারুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, আমাদের অধিদপ্তরের টেন্ডার মোতাবেক ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঘর বানানোর কাজ পেয়েছে। সারাদেশে উনারা সরবরাহ করছেন। আমাদের উপজেলার জন্য ঘর এনেছে আমরা সেগুলো এখনও গ্রহন করিনি। জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, কেউ মিথ্যা কথা বললে তো তাঁর মুখ চেপে ধরার সুযোগ নাই।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল ইসলাম বলেন, আমি জেনেছি এখনও ওইসব মুরগির ঘর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বুঝে নেননি। বুঝে না নিলে তো বলা যাচ্ছে না, ঘর গুলো কি রকম। 

37