বাংলাদেশ

গাইবান্ধায় কোরবানির হাট নিয়ে পুলিশ জনতা সংর্ঘষ পুলিশসহ আহত ৪০ মামলা

অফিস   গাইবান্ধা

১৩ জুন ২০২৪


| ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে চলমান অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট নিয়ে পুলিশ ও জনতার সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৪০/৪৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মাহবুব আলম। এরআগে গত বুধবার রাতে এসআই আব্দুল আলিম বাদি হয়ে নামনীয় ৩৩ জন ও অজ্ঞাত আরও ৭০/৮০ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের খামার ধুবনি গ্রামের মজুমদার হাটে ইজারাদার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ হাটে যায়। এসময় অবৈধ ইজারাদারের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোরে। পুলিশ আত্নরক্ষার জন্য তিন রাউন্ট ফাকা গুলি ছুরে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় চার জন পুলিশ আহত হন। বর্তমানে আহত পুলিশ সদস্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, র্দীঘদিন থেকে শান্তিরাম ইউনিয়নের পাঁচগাছি গ্রামের ওবায়দুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি মজুমদার হাটটি ১ বছরের জন্য ইজারা পান। সেখানে পশুর হাট বসানোর অনুমতি ছিল না। কিন্তু ওবাইদুল ইসলাম অনুমতি ছাড়াই মজুমদার বাজার এলাকায় কোরবানির পশুর হাট বসান। খবর পেয়ে পুলিশ ও জনতার মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। এতে চার পুলিশসহ অন্তত ৪০জন আহত হয়েছেন। বিক্রির জন্য হাটে আনা অন্তত ৩০টি গরু-ছাগল হারিয়েছে।
হাটে আসা শাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ৬০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু ক্রয় করে চালান করার জন্য যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে হাটের লোকজন সবাই দৌড় দেয়। এসময় আমার ক্রয় করা গুরুটি ছুটে যায়। আর পাইনি। এখন কোরবানি দিবো কি দিয়ে। পায়ে ব্যথা পেয়েছি। অনেক লোকজন আহত হয়েছে। আনছার আলী বলেন, একটি ষাঁড় গরু হাটে বেচার জন্য নিয়ে এসে হারিয়ে ফেললাম। হাটে অনেক মানুষ, পুলিশের গুলি, বাঁচার জন্য কে কোথায় ছুটছে। হাত থেকে গরুটা কোথায় গেলো খুঁজে পাচ্ছি না। গরু হারিয়ে গেলে আমার সব শেষ হবে। এ ক্ষতিপুরণ আমাকে কে দিবে ? মজুমদার হাটের ইজারাদার ওবাইদুল ইসলাম করে বলেন, আয়কর ও ভ্যাট সহ প্রায় ৪২ লাখ টাকায় মজুমদার হাটটি এক বছরের জন্য ডাকের মাধ্যমে ইজারা পাই। কিন্তু কোরবানির পশুর হাট বসানোর অনুমতি ছিল না। তবে চলতি মাসের ১০ তারিখে কোরবানির পশুর হাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন দেয়া হয়। এরপর আমরা সুপ্রিমর্কোটে যাই। কোর্ট থেকে ইউএনও কাছে একটি উকিল নোটিস পাঠানো হয়। 
পুলিশকে চাঁদা না দেওয়ায় হাট বন্ধের অভিযোগ করে দেয়ার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, পুলিশ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। তাদের কথা অনুসারে প্রথমে ৩০ হাজার ও পরে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ সম্পন্ন টাকা একসঙ্গে দাবি করেন। সেই চাঁদার টাকা না দেওয়ায় হাট ভেঙে দিয়েছে পুলিশ বলে জানান তিনি। 

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইট-পাটকেল  ছোরে। পরে পুলিশ আত্নরক্ষার প্রয়োজনে তিন আউন্ড ফাঁকা গুলি ছোরে। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এরমধ্যে দুইজন পুলিশ সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্তিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় ৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। হাট উচ্ছেদ করতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশসহ বেশকিছু মানুষ আহত হয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, খোঁজ-খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

43