বাংলাদেশ

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ

প্রতিনিধি দেবীগঞ্জ   পঞ্চগড়

০৯ জুন ২০২৪


| ছবি: প্রতিনিধিঃ

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ১নং চিলাহাটি  ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৭জুন) দেবীগঞ্জ থানায় এনিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন নির্যাতিত ছাত্রের পিতা দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের বলরামপুর তাঁতিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালেক (৩৮)। আব্দুল মালেক অভিযোগ করেন, গত (৫জুন) বুধবার তাদের বসবাসরত বাড়ির চলাচলের রাস্তার দ্বন্দ্ব নিয়ে দু"পক্ষের দ্বন্দ্বে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার নাবালক ছেলে রাকিবুল ইসলাম (১৩) কে বিরোধী পক্ষ শারিরীক নির্যাতন করে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত (৫জুন) বুধবার আব্দুল মালেকের বাড়ির পার্শ্বে ৩২ শতক জমির পাশের চলাচলের রাস্তা নিয়ে এই দ্বন্দ্ব। উক্ত জমির মালিক রনজিত কুমার রায় (৩৫) এর সাথে ওই এলাকার কয়েকজনের কাছে বায়নাসূত্রে জমিটি বিক্রি করার প্রকৃয়া চলছে৷ তাই যারা জমি কিনছেন তারা জমির কিনারা দিয়ে বনজ চারা লাগিয়েছেন। কিন্তু আব্দুল মালেকের পরিবারের দাবি চলাচলের রাস্তাটি সরু, তাই গাছের চারা গুলো বড় হলে উক্ত রাস্তাটি দিয়ে চলাচল কষ্টসাধ্য হবে।

আব্দুল মালেকের স্ত্রী মোছাঃ রেখা বেগম (২৮) জানান, উক্ত রাস্তাটি দিয়ে কোনো অটো বা ভ্যান গাড়ি যাওয়া আসা করতে পারে না। তাই সেখানে গাছ লাগালে গাছগুলো বড় হলে সমস্যা আরো বাড়বে । তাছাড়া আরো জানায়, রাস্তাটির পার্শ্ববর্তী জমির মালিকের সাথে অন্যত্র জমি লেনদেনের মাধ্যমে বদল নিয়েছে আব্দুল মালেক। তাই তারা যখন চারা রোপন করে কিছু গাছের চারা আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী রেখা বেগম তুলে দিয়ে রাস্তার একটু নিচের রোপন করতে বলে। এনিয়ে জমির মালিক পক্ষের সাথে আব্দুল মালেকের পরিবারের দ্বন্দ্ব লাগে।

পরে বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষই অত্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ কে অবগত করেন। পরে গত (৬জুন) বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার সময় আব্দুল মালেকের ছেলে রাকিবুল তার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছোট ভাইয়ের জন্য বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যায়। পরে খাবার দিয়ে বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে দেউনিয়ার বাজার হতে আলমপাড়া গামী পাকা রাস্তা সংলগ্ন অভিযুক্তদের মাঝে একজন মোঃ তৈবুল ইসলাম (৪০) এর নিজের মুদীর দোকানের সামনে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের নির্দেশে রাকিবুল ইসলামের পথরোধ করে সকল অভিযুক্তগন তাকে বেধড়ক মারপিট করে। পরে তাকে স্থানীয়রা রাকিবুলকে উদ্ধার করে আব্দুল মালেক কে খবর দেয়। পরবর্তীতে অভিযুক্তগণ আব্দুল মালেক ও তার বড় ভাই আব্দুল খালেক (৪২) কে প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন আব্দুল মালেক।

পরে আব্দুল মালেক বাদী হয়ে চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সহ ৭ জনকে আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। বাকিরা হলেন ১।মোঃ তৈবুল ইসলাম (৪০), পিতা- মৃতঃ আফিজ উদ্দীন, ২।মোঃ ওমর ফারুক (৪১), পিতা- মৃতঃ ইয়াকুব আলী, ৩।মোঃ সুলতান আলী (৫০), ৪। মোঃ মহির উদ্দীন (৬৫), উভয়েরই পিতা- মৃতঃ কছির উদ্দীন, ৫।মোঃ ফরিদুল ইসলাম (৫৫) ও ৬।রনজিত কুমার রায় (৫২), পিতা- অনিকুল সাধু।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন , তাকে নিয়ে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। রাস্তার পাশে গাছ লাগানো নিয়ে দুপক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি গত ৬জুন বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি অত্র এলাকায় গিয়ে একটি দোকান পারে বসি। ইতিমধ্যে আব্দুল মারেকের ১৩ বছরের ছেলে সন্তান উক্ত স্থানে এসে বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় সবাইকে গালিগালাজ করতে থাকে। পরে আমি তাকে বলি বাবা তুমি বাসায় যাও আমি তোমাদের বাসা যাচ্ছি। পরে একপক্ষের সাথে কথা বলে আব্দুল মালেকের বাড়ি গিয়ে দেখি তার ছেলে কাঁদছে। কান্নার বিষয় জানতে চাইলে সে জানায় আমার নির্দেশে নাকি উপস্থিতগন তাকে মারধর করেছে। কিন্তু সেরকম কিছুই ঘটেনি। আমি নিজেই সেখানে উপস্থিত ছিলাম। তবুও আমাকে জড়িয়ে উপস্থিতগনের সাথে যে অভিযোগটি আব্দুল মালেক করছেন এটি একটি ঘৃনিত কাজ। তারপরও আমি একজন প্রতিনিধি হিসেবে বিষয়টি আপোষ মিমাংশা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ।

10