বাংলাদেশ

বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে চলছে কোটি কোটি টাকার চোরাচালান

মিঠু মুরাদ,পাটগ্রাম   লালমনিরহাট

০৯ জুন ২০২৪


| ছবি: প্রতিনিধিঃ

আমদানি-রপ্তানি পন্যবাহী ট্রাকের মাধ্যামে লালমনিরহাটের বুড়িমারী-চ্যাংড়াবান্ধা চেকপোষ্ট দিয়ে চোরাচালানি বৃন্ধি পেয়েছে। সরকার কোটি কোটি টাকার শুক্ল ফাঁকি দিয়ে এক অসাধু শ্রেনির অসাধু চক্র পণ্য পাচার করে আসছে। দুই পাথের দুটি সিন্ডিকেন্ট এ কাজে জড়িত বলে জানা গেছে সকালের বাণী অনুসন্ধানে। সম্প্রতি দেখা গেছে এ স্থলবন্দর দিয়ে একের পর এক অবৈধভাবে কোটি টাকার পণ্য পাচার করে আনা হচ্ছে। এতে জড়িত ভারত-বাংলাদেশের অসাধু কয়েকজন ব্যবসায়ীর দৌরাত্ম্যে নানামুখী সংকটে পড়েছে এ স্থল শুল্ক স্টেশন ও বন্দরটি।

সকালের বাণী অনুন্ধানে জানা গেছে, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে অধিক হারে পাথর আমদানি করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৬০০ গাড়িতে পাথর ও অন্যান্য পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করা হয়। ঋণপত্র (এলসি) অনুযায়ী এসব গাড়িতে আনা পণ্যের সঠিকতা যাচাই করা হয় অনুমান করে। গুরুত্বপূর্ণ এ শুল্ক স্টেশনে ‘পণ্য স্ক্যানার’ না থাকার সুবাদে অসাধু ব্যবসায়ীরা আমদানি করা পণ্যের গাড়ির ভেতরে ভারতীয় শাড়ি, থ্রিপিস, কসমেটিকস্, গয়না, চিকিৎসা সামগ্রী পাচার করে আনছে। 

গত ১২ মার্চ ১৮৮১২৪০১০০০১ নম্বর এলসি অনুযায়ী ভারতের কলকাতার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান অভিক অ্যান্ড সন্সের নিকট ১৮ মেট্রিক টন চায়না ক্লে পাউডার আমদানির অর্ডার করেন ঢাকার মেসার্স নূর এন্টারপ্রাইজ। পণ্যগুলো ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে গত ৬ মে ভারতীয় ট্রাকে বুড়িমারীতে আনা হয়। পণ্য গুলো যাচাই করে আমদানিকারকের প্রতিনিধিকে বুঝিয়ে দেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিনেও পণ্য বুঝে না পেয়ে পাটগ্রাম থানা ও গাজিপুরের টঙ্গী থানায় মামলা করেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এতে গাজিপুর ডিবি পুলিশের একটি দল মামলার আসামী বুড়িমারী ইউনিয়নের তুহিনুজ্জামান বাবু ও মনোয়ার হোসেনকে আটক করে এবং ২০ দিন পর হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের একটি বাড়ি থেকে ক্লে পাউডার গুলো উদ্ধার করে।

এ সময় উদ্ধারকৃত পাউডারের ভেতর অবৈধভাবে থেকে আনা ১০ কার্টন সিটি গোল্ডের বিভিন্ন গহণা, ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, কেনুলার কার্টন ৩০ টি ও অন্যান্য পণ্য বের হয়। এসব পণ্যের মূল্য প্রায় কোটি টাকা। একইভাবে গত ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ ও এ বছরের ১৭ ফেব্রæয়ারি পাথর বোঝাই ট্রাকে অবৈধভাবে আনা হয় কয়েক কোটি টাকার নানা পণ্য। একাধিক আমদানি-রপ্তানিকারক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাবি করেন, ভারত-বাংলাদেশের একটি ক‚চক্রিমহল  বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসায়ী প্রতিহিংসায় নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করে সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এতে শত শত আমদানি-রপ্তানিকারকেরা চিন্তিত।    

বুড়িমারী স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুজ্জামান সায়েদ বলেন, একটি চক্র পাথর আমদানির নামে ভারত থেকে শাড়ি ও থ্রিপিস কাপড়, সুগন্ধি ক্যামিক্যাল, কসমেটিক, চিকিৎসা সামগ্রীসহ নানা পণ্য অৗবধভাবে নিয়ে আসছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কাস্টমস কর্তৃপক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।

এ ব্যাপারে বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশনের (কাস্টমস) সহকারী কমিশনার (এসি) নাজমুল হাসান বলেন, বুড়িমারী কাস্টমসে দায়িত্বরত সবাই কয়েকধাপে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির গাড়ি সমূহ চেক করে। কোনো গাড়ি সন্দেহ হলে খালি করে দেখা হয়। কোনো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে কোনো মালামাল আনলে ও ধরা পড়লে কাস্টমস আইনে তাঁর লাইসেন্স বাতিল করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গাড়িসহ পণ্য স্ক্যান করতে ‘স্ক্যানার’ বসাতে রংপুর কমিশনারের মাধ্যমে এনবিআরে চিঠি ও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

24