বাংলাদেশ

ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইজি ডেলিভারি আস্থা সাধারণ মানুষের

নিজস্ব প্রতিবেদক   কুড়িগ্রাম

০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪


| ছবি: 

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নরমাল ডেলভারি চিকিৎসার জন‍্য নির্ভরযোগ‍্য চিকিৎসালয় হিসেবে খ‍্যাতি বাড়ছে। কর্তৃপক্ষ বলছেন,হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ নার্সদের আন্তরিকতা ও দক্ষতায় নরমাল ডেলিভারি চিকিৎসার জন‍্য একটি আদর্শ চিকিৎসালয়ে পরিনত হচ্ছে। এতে প্রসূতি রোগীদের আগ্রহও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গর্ভবতী মায়েরা এখন স্হানীয় ক্লিনিকে না গিয়ে উপজেলা হাসপাতালেই নরমাল ডেলভারি করাচ্ছেন। এতে হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় শীততাপ নিয়ন্ত্রীত একটি আধুনিক কক্ষে এই নরমাল ডেলিভারির কাজ করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে হাসপাতালে ১৪৭টি নরমাল ডেলিভারি  ২০২২ সালে ৩৪৯ টি ও ২০২৩ সালে ৩৬৮টি এবং ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত এই হাসপাতালে ৩৫টি নরমাল ডেলিভারি সফলভাবে করা হয়েছে। এতে মা ও ভূমিষ্ঠ শিশুর কোনো ক্ষতি হয়নি।

হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানিয়েছে,শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি সনদ দেওয়া হয়। যার ফলে সহজেই জন্ম নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন শিশুর পরিবার। তাছাড়া গর্ভবতী মা-দের সিজারিয়ান অপারেশন না করে নরমাল ডেলিভারিতে জনসচেতনতা বাড়াতে তারা নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। নরমাল ডেলিভারিতে উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মাঠ পর্যায়ে শিক্ষক, ইমাম, জনপ্রতিনিধি, এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে অবহিতকরণ সভা ও মা সমাবেশসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স থেকে গর্ভবতী মা দের ডেলিভারির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চলতে থাকে কাউন্সিলিং আর চেকআপ।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, নরমাল বা স্বাভাবিক প্রসব মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই অনেক নিরাপদ যা প্রসবকালীন মৃত্যু ঝুঁকি কমায়। ডেলিভারির ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মা-দের হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। নরমাল ডেলিভারিতে মায়েরা খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করতে পারেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারি হওয়া তিলাই ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ছালমা বেগম, পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ছিট পাইকেরছড়া গ্রামের আবিদা সুলতানা, সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামের ফরিদা পারভিন জানান, শুরুতে তাদের নরমাল ডেলিভারিতে ভয় লাগলেও নার্স ও চিকিৎসকদের আশ্বাসে হাসপাতালে আমাদের  নিরাপদে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। এতে আমাদের অনেক খরচও বেঁচে গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, মাতৃ মৃত্যুর হার কমাতে এবং নরমাল ডেলিভারি নিরাপদ করতে হাসপাতালে দক্ষ মিডওয়াইফ নার্স রয়েছে। এছাড়া আমরা সমাজের সর্বস্তরের মানুষদের নিয়ে ইজি ডেলিভারি উদ্ভুদ্ধকরনে অবহিতকরন সভা সমাবেশ করে যাচ্ছি। যাতে হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পায়। সবার সহযোগিতা পেলে স্বাভাবিক সন্তান প্রসব সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি।

25