বাংলাদেশ
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ জন ডাক্তারের বিপরীতে আছেন মাত্র ৩ জন
১৩ মে ২০২৪
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরন্জাম না থাকায় কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার আড়াই লক্ষাধিক মানুষ। দীর্ঘদিন থেকেই এই স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরন্জাম সংকটে ভূগছে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এমন বেহাল দশায় উপজেলার দরিদ্র মানুষগুলো উন্নত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা এবং এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা। উপজেলা স্বাস্হ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছৈ,৫০ শয্যা বিশিষ্ট ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সহ ৩০টি পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন চিকিৎসক। তারা হলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও অন্য একজন চিকিৎসক। দুজন চিকিৎসক ডেপুটেশনে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন। একজন ফাউন্ডেশন ট্রেনিং এ থাকায় চিকিৎসকের ২৪টি পদ শূন্য রয়েছে।
এছাড়াও নির্ভূল রোগ নির্ণয়ের সুবিধার্থে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি সুবিধা চালু থাকলেও রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রোগীরা এসব সুবিধা পাচ্ছেন না। দু'টি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনের একটি নষ্ট। চারটি ইসিজি মেশিনের তিনটি অকেজো। নতুন একটি এক্সরে মেশিন পাওয়া গেলেও এক্সরে মেশিন চালানোর টেকনিশিয়ান নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন টেবিল নেই। সেই সাথে নেই অপারেশন লাইট। এতে উপজেলার দরিদ্র রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অপারেশন সুবিধা পাচ্ছেন না। উপজেলার দরিদ্র মানুষদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্হল হচ্ছে উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স। সেখানে নেই উন্নত চিকিৎসা ব্যাবস্হা। ফলে স্বল্প আয়ের মানুষরা অসুস্থ হলে দৌড়াতে হয় বেসরকারী ক্লিনিকগুলোতে।সেখানে তাদের চিকিৎসা ব্যায় মিটাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, প্রতিদিন বহির্বিভাগে ও জরুরি বিভাগের বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে হতদরিদ্র, বিত্তহীন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের সাধারণরোগী সরকার চিকিৎসা সেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। শনিবার (১১ মে) সকাল ১১টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ না থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দ্বিতীয় তলায় আবাসিক মেডিকেল অফিসারের কার্যালয়ে রোগী দেখছেন। সেখানে পুরুষ ও মহিলা রোগীদের লম্বা লাইন লক্ষ্য করা গেছে। অনুরুপ চিত্র দেখা গেছে বহির্বিভাগেও। সেখানে একজন মাত্র চিকিৎসক থাকায় রোগীদের লম্বা লাইন হাসপাতালের বারান্দায় চলে এসেছে।
স্হানীয়রা জানান, উপজেলার আড়াই লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলেও জনবলসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি না করায় অন্তহীন সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এখানে মাত্র ৩ জন ডাক্তার আছেন। দ্রুত চিকিৎসক সংকটসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি কামনা করেন স্থানীয়রা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগত রোগীর স্বজনরা বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম হয় না। এসবের জন্য বেসরকারি ক্লিনিকে ছুটতে হয়।এতে খরচের ব্যায় মিটাতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়।'
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি সুবিধা চালু থাকলে একদিকে নিম্ন আয়ের মানুষ স্বল্প মূল্য সেবা পেতো। অপরদিকে সরকার এখান থেকে নিয়মিত বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করতে পারতো।কিন্তুু সেটা না থাকায় একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে উপজেলার মানুষ কাঙ্ক্ষিত সাশ্রয়ী স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা মোশাররফ হোসেন (৬০) নামের এক বৃদ্ধ জানান, শারীরিক সমস্যা নিয়ে সকালে হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা দিয়েছেন। পরীক্ষার কাগজপত্র নিয়ে ঘণ্টা খানেক ধরে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো রিপোর্ট দেখাতে পারিনি। গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম (৪৫) বলেন, দেড় মাস আগে পায়ে ঘা হয়েছিল। তখন এখানে এসে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। এখন ঘা একটু কমেছে। আবার ডাক্তার দেখাতে এসেছি। টিকিট কেটে লাইনে দাড়িয়ে আছি। এখনো ডাক্তার দেখাতে পারিনি।
উপজেলা স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। যে কারণে চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। প্রশাসনিক কাজ সেরে হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখছি। চিকিৎসক, চিকিৎসা উপকরণ স্বল্পতাসহ অন্যান্য বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এবিষয়ে কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা:মন্জুর-এ- মোর্সেদ বলেন,ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সংকট ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) স্যারের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছি। আশা করছি শীঘ্রই এর সমাধান পাওয়া যাবে।
73
-
সস্তা ‘গরীবের হক’ ধরাশয়ী, লোকসানে হতাশ মৌসুমী চামড়...
২ ঘন্টা আগে
-
অবিক্রীত রয়ে গেলো কোরবানির সাড়ে ২৩ লাখ পশু
১৬ ঘন্টা আগে
-
সহযোগিতা পেলে ১২ ঘণ্টার আগেই কোরবানির পশুর বর্জ্য...
১ দিন আগে
-
রংপুরে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত
১ দিন আগে
-
নাগেশ্বরীতে কচুক্ষেত থেকে ব্যবসায়ির ক্ষতবিক্ষত মরদ...
১ দিন আগে
-
ঈদ ঘিরে ল্যাম্পি স্কিনে আক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রি...
১ দিন আগে
