বাংলাদেশ

সৈয়দপুরে ৩ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ, ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক   নীলফামারী

১৫ মার্চ ২০২৪


| ছবি: 

রংপুরের তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ কর্তৃক রংপুর-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষার ঘটনায় নীলফামারীর  সৈয়দপুরে বাস-মিনিবাস দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে প্রায় আড়াই ঘন্টা সড়ক অবরোধ রাখা হয়। নীলফামারী জেলা  বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকেরা শুক্রবার দুপুর পৌণে ১ টা থেকে পৌনে ৩ টা পর্যন্ত  ওই অবরোধের সৃষ্টি করেন। আর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় মহাসড়কের ওপর  এলোপাতাড়িভাবে বাস মিনিবাস রেখে ওই অবরোধের কারণে সৈয়দপুর-দিনাজপুর, সৈয়দপুর- রংপুর,  সৈয়দপুর- পার্বতীপুর, সৈয়দপুর- নীলফামারী, সৈয়দপুর- ডোমার, সৈয়দপুর- ডিমলা রুটে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে যানবাহনে থাকা যাত্রী ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। পরে বিকেল পৌণে তিনটায় থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 
পুলিশ সূত্রে জানা যায়,  ঘটনার দিন শুক্রবার(১৫ মার্চ) রংপুরের তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের একটি দল রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের  বালাবাড়ি নামক স্থানে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন। এ সময় রংপুর থেকে সৈয়দপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা মেহেদী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মিনিবাসকে (নম্বর: পাবনা-জ-০৪-০০৪১) তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার সামনে  থামার সংকেত  দেয় পুলিশ। কিন্তু  মিনিবাসটির চালক বুলবুল পুলিশের সংকেত না মেনে দ্রুতগতিতে সামনে দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় হাইওয়ে পুলিশ  তাদের মোটরসাইকেল নিয়ে মিনিবাসটির পিছু নেয়। আর এ ঘটনাটি  আঁচ করতে পেরে মিনিবাসটির চালক কিছু দূর গিয়ে মিনিবাসটি থামিয়ে চালক বুলবুল সেখান থেকে সটকে পড়েন।পরে পুলিশ  সেখানে গাড়ির  কাগজপত্র দেখতে চাইলে  সুপার ভাইজার ও হেলপার তা দেখাতে ব্যর্থ হন। পরে পুলিশ তাদেরসহ গাড়িটি থানায় নিয়ে যায়। এসময় মিনিবাসটির চালককে কাগজপত্র নিয়ে এসে গাড়িটি নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু চালক বুলবুল পালিয়ে সৈয়দপুরে গিয়ে মোটর শ্রমিকদের বলেন তারাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ অকারণে তার গাড়ি আটক করেছে এবং সুপারভাইজার ও হেলপারকে বেদম মারপিট করেছেন। আর চালক বুলবুলের ওই কথা শুনে ও বিশ^াস করে সেখানে উপস্থিত সব মোটর শ্রমিকেরা উত্তেজনা  হয়ে পড়েন। তারা তাৎক্ষণিক সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় মহাসড়কে মিনিবাস এলোমেলোভাবে রেখে অবরোধের সৃষ্টি করেন। ফলে মুর্হুতেই সেখানে বিভিন্ন রকম যানবাহন দীর্ঘ লাইনে আটকে পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন বাস-মিনিবাসে থাকা যাত্রী সাধারণ। 
ঘটনার  প্রায় ২ ঘন্টা পরে জুম্মার নামাজ শেষে  সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  কল্লোল কুমার দত্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোটর মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাবৃন্দের সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে  আলাপ-আলোচনায় বসেন। এর প্রায় ১ ঘন্টা পর বেলা পৌনে ৩ টার দিকে সড়কের ওপর রাখা বাসমিনিবাস  সরিয়ে অবরোধ তুলে নেয়া হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 
নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মমতাজ আলী বলেন, পুলিশ কর্তৃক  মিনিবাস আটকের ঘটনায় বাস মালিক সমিতির নির্দেশে ওই অবরোধের সৃষ্টি করা হয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে  আলাপ-আলোচনার অবরোধ তুলে নেয়া হয়। 
রংপুরের তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ছুটিতে থাকায় দায়িত্বরত  উপপরিদর্শক(এসআই) মো.  খোরশেদ আলম বলেন, নিয়মিত গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের অংশ হিসেবেই ওই বাস থামানোর নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু কাগজপত্র না থাকায় চালক গাড়ী না থামিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে পিছনে ধাওয়া করে গাড়িটি আটক করা হয়েছে।  বর্তমানে মিনিবাসটি তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আর সুপার ভাইজার ও হেলপারকে মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। চালক গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে এলেই গাড়িটি ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
 

24