বাংলাদেশ

রংপুরে মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় বিভাগীয় কমিশনার  বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক   রংপুর

২৭ মার্চ ২০২৪


| ছবি: 

মুক্তিযোদ্ধাগণ দেশ স্বাধীন করেছেন বলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক বছরে আর্থসামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসন আয়োজনের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনা সভা ও  বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যবর্গের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালিদের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করে, যা বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে আমারা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। বাঙালি জাতিকে একটি সুখি-সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবার স্বপ্ন পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।  
বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধুকে জানতে তাঁর লেখা বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ মনোযোগসহকারে পড়তে হবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নতুন প্রজন্মকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করার আহ্বান জানান।  
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফর, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সায়ফুজ্জামান ফারুকী, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাগণ তাঁদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে আমাদের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ আমাদের সাহস ও অনুপ্রেরণার উৎস। মুক্তিযোদ্ধাদের দেশপ্রেমের যে আদর্শ, তা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করি। মুক্তিযুদ্ধ তখনি সার্থক হবে, যখন সবাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করবে।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে রংপুরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ২৬ মার্চ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রংপুর নগরীর মডার্ন মোড়স্থ স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ অর্জনে বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, জেলাপ্রশাসক, পুলিশ সুপার, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন-সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া রংপুর ডিসি মোড়স্থ বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে ও কালেক্টরেট সুরভি উদ্যানস্থ শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল আটটায় রংপুর শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। রংপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ মোবাশ্বের হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সায়ফুজ্জামান ফারুকী ও পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী।
কুচকাওয়াজে অংশগগ্রহণ করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, বি.এন.সি.সি, জেল কন্টিনজেন্ট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং রংপুর জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কুচকাওয়াজ শেষে অনুষ্ঠিত ডিসপ্লেতে রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ, কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ, সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা), সরকারি শিশু পরিবার (বালক) ও মেট্রোপলিটন পুলিশ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

19