বাংলাদেশ

ফুলবাড়ীতে দিনে প্রচন্ড তাপদাহ ও রাতে ঠান্ডা অনুভুত অতিষ্ঠ জনজীবন

অনিল চন্দ্র রায়,ফুলবাড়ী   কুড়িগ্রাম

০৪ মে ২০২৪


| ছবি: 

টানা এক থেকে দেড় মাস ধরে প্রচন্ড তাপদাহ ও গরমে অতিষ্ট জনজীবন। চলমান তাপদাহে মাঝে বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন ফসল, আম-কাঁঠাল গাছ ও ফুল-ফলের গাছ রক্ষা করতে প্রতিনিয়ত কৃষকরা সেচ ও শ্যালোমেশিনের পানি দিচ্ছেন। এদিকে আবহাওয়ার বিরুপ পরিবর্তনের ফলে দিনের বেলা প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত থাকলেও রাতের বেলা ঠান্ডা অনুভূত হওয়ায় কাঁতা কম্বল গাঁয়ে দিয়ে ঠান্ডা নিবারণের চেষ্টা করছেন এ অঞ্চলের মানুষজন । টানা চৈত্র-বৈশাখ মাস জুড়ে রৌদ্রজ্জল দিনে এখনও প্রচন্ড গরম থাকলেও সন্ধার পর থেকে মৃদু শীত ও ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা জুড়ে। সীমান্তবর্তী এ উপজেলা ভারতের হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায়  আবহাওয়ার বিরুপ পরিবর্তনে দিনের বেলা প্রচন্ড তাপদাহ ও গরম থাকলেও সন্ধার পর মৃদু শীত ও ঠান্ডার অনুভূত হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, সকাল ৯ টা থেকে সন্ধা ৬ টা পর্যন্ত প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবনে দূর্ভোগ নেমে আসে। এর পর সন্ধা ৭ থেকে ঠান্ডার অনুভূত হয়। রাতে ঘুমাতে গেলে কাঁতা ও কম্বল ব্যবহার করছেন এ অঞ্চলের মানুষজন। সকাল ৭ টা পর্যন্ত বিভিন্ন গাছের পাতা, ঘাস ও ধান ক্ষেতে শিশির জমে থাকছে। রাতে কেউ জরুরি প্রয়োজনে কোথা গেলে গরম কাপড় পড়ছেন অনেকেই।

টানা এক মাস ধরে দিনের বেলা সূর্যের তেজ ও প্রচন্ড তাপদাহ থাকায় কাহিল হয়ে পড়েছেন উত্তরের জনপথ। কুরুষাফেরুষা এলাকার কৃষক পুলিন চন্দ্র রায় ও ঈশা মিয়া জানান চৈত্র-বৈশাখ মাসে কখনও এ রকম আবহাওয়া দেখিনি। টানা এক থেকে দুই মাস বৃষ্টির দেখা নেই। আমরা জীবনেও বৈশাখ মাসে বোরে ধান ও বিভিন্ন সবজির ফসল রক্ষার্থে সেচ ও শ্যালোমেশিনের পানি ব্যবহার করিনি। বৈশাখ মাস জুড়ে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলে সেচ ও শ্যালোমেশিনের পানি দিয়ে ফসল রক্ষা করছি। এতে আমাদের কৃষিতে অনেক খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এই দুই কৃষক আরও জানান যতই দিন যাচ্ছে মনে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। ফসলের মাঠে প্রচন্ড রোদ ও তাপদাহ কাজ করাটা খুবই কষ্টকর। এদিকে রাতে আবার ঠান্ডা। কাঁতা-কম্বল গাঁয়ে দিয়ে ঘুমাতে হয় বলে জানান এই দুই কৃষক।

ভাঙামোড় এলাকার কার্তিক চন্দ্র সরকার ও কাশিপুর এলাকার হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, দিনে প্রচন্ড গরম। অসহনীয় গরম সহ্য করতে হয়। বৃষ্টিতোর দেখায় নেই। আবার রাত হয়ে ঠান্ডার আগমন। দিনের বেলা বাসা-বাড়ীতে এসি ও ফ্যান ব্যবহার করে প্রচন্ড গরম থেকে কিছুটা রক্ষা পাই। কিন্তু রাত ৯ টার পর মোটরসাইকেল নিয়ে জরুরি কাজে কোথায়ও গেলে ঠান্ডা লাগে এবং রাতে ঘুমাতে গেলেই কাঁতা ও কম্বলের প্রয়োজন খুবই জুরুরি। রাতের বেলা প্রশান্তির ঘুম হলেও দিনে প্রচন্ড তাপদাহ নিয়ে থাকতে হয়। টানা এক থেকে দেড় মাস ধরে এ আবহাওয়া বিরাজ করছে আমাদের এলাকায়।  

দিনে প্রচন্ড তাপদাহ ও রাতে ঠান্ডার বিষয়ে জেলার রাজারহাট উপজেলার কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকারকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান একটা নরমাল বিষয়। ফু্লবাড়ীসহ জেলা জুড়ে এ বছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করে হয়েছ ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তিনি শনিবার বিকাল ৩ টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা  রেকর্ড করেছেন ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তিনি আরও জানান গত দুইদিন থেকে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। শনিবার গভীর রাত থেকে এ অঞ্চলের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। 

30